বর্জ্য ব্যবস্থা
MCQ/SAQ
1.পরিবেশে কাকে তৃতীয় দূষণ বলা হয়–বর্জ্য দূষণ কে
2. প্লাস্টিক কোন ধরনের বর্জ্য–জৈব অভঙ্গুর
3. একটি জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য এর উদাহরণ—শাক সবজির খোসা
4. দুটি কঠিন বর্জ্য এর উদাহরণ–শিল্প কারখানার যন্ত্রাংশ ফসলের অবশিষ্ট অংশ
5. একটি তেজস্ক্রিয় বর্জ্য এর নাম– ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম এবং কার্বন
6. সেলুলোজ কি থেকে পাওয়া যায়– কাগজ
7. কলকারখানায় একটা বর্জ্য পদার্থের উদাহরণ দাও–সূক্ষ্ম ভাসমান কঠিন কণা
৪. নির্মাণ ক্ষেত্র থেকে নির্গত বর্জ্য কে কি বলে–ডি বর্জ্য
9. একটা জৈব অবিশ্লেষ্য পদার্থের উদাহরণ দাও–কাচ
10.BOD এর পুরো নাম কি –বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড/biological oxygen demand
11. ক্যাডমিয়াম দূষণের ফলে কোন রোগ হয়– ইটাই ইটাই
12. ল্যান্ডফিল্ড থেকে উৎপন্ন গ্যাস টির নাম কি–মিথেন ও কার্বন–ডাই–অক্সাইড
13. জৈব বস্তুর পচনের ফলে কোন গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপন্ন হয়–মিথেন
14. কঠিন বর্জ্য অক্সিজেন বিহীন দহন কে কি বলে –পাইরোলিসিস
15. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রথম পর্যায়ে গৃহীত পদক্ষেপ কোনটি–বর্জ্য হ্রাস করণ
16. জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য কোন রঙের পাত্রে রাখা হয়–সবুজ রঙের
17. 5 জুন কি দিবস পালিত হয়–বিশ্ব পরিবেশ দিবস
18. স্বচ্ছ ভারত কি–২০১৪ সালের ২ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদি কর্তৃক ভারতকে পরিষ্কার রাখার জন্য গৃহীত জাতীয় পদক্ষেপ
19. গঙ্গা নদীর কোন অংশে সর্বাধিক দূষণ দেখা যায়–মধ্য গতিতে
20. একটা বিষাক্ত বর্জ্য এর নাম–পারদ
21. তুস ছিবরা কোন ধরনের বর্জ্য–কৃষিজ বর্জ্য
22. একটি শিল্প বর্জ্যের উদাহরণ–থরিয়াম
23. তেজস্ক্রিয় বজ্যের মূল উৎস–পারমাণবিক বিদ্যুৎ
24. ভাগীরথী হুগলি নদীর ওপর যে বর্জ্যের প্রভাব সর্বাধিক–পৌর বর্জ্যে
25. কোন উৎস থেকে বর্জ্য আসেনা–সৌর বিদ্যুৎ
26. হিরোশিমা ও নাগাসাকির বোমা কি বর্জ্য–তেজস্ক্রিয়
27. পারদ দূষণে কোন রোগ হয়–মিনামাটা
28. আর্সেনিকের প্রভাবে কোন রোগ হয়–ব্ল্যাক ফুট
29. মানব শরীরে দূষিত জল থেকে কোন রোগ হয়–আমাশয়
30. জলাশয় প্রচুর উদ্ভিদ জন্মালে তার ফলে কি সৃষ্টি হয়–ইউট্রোফিকেশন
31. ভার্মি কম্পোস্ট সার্প তৈরিতে প্রধান ভূমিকা কে নেয়–কেঁচো
32. বায়ো গ্যাসের প্রধান উপাদান কি–মিথেন
33. যানবহন এর কার্বন করা রোধের জন্য কি ব্যবহার করা হয়–স্ক্রাবার
34. একটি পুনর ব্যবহারযোগ্য বর্জ্য–ফ্লাই অ্যাশ
35. উচ্চ তাপমাত্রায় বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার যন্ত্র–ইনসিনেরেটর
36. ক্লিন সিটি পরিকল্পনাটি দেখা যায়–কলকাতায়
37. সর্বাধিক দূষণযুক্ত শহর–নিউ দিল্লি
38. কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন ভারতে কত সালে শুরু হয় –১৯৬৫ সালে
39. নমামি গঙ্গা পরিকল্পনাটি হল–গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনা
40. সিএফসি কোন বর্জ্যের উদাহরণ–গ্যাসীয় বর্জ্য
41. যে সকল বর্জ্য বিয়োজিত হয় তাদের কি বলে–জৈব বর্জ্য
42. ফ্লাই অ্যাশ কোন শিল্পে ব্যবহার করা হয়–সিমেন্ট শিল্পে
43. বৈদ্যুতিক বর্জ্যকে সংক্ষেপে কি বলে– – বর্জ
44. ধান ক্ষেত থেকে উৎপন্ন গ্যাসের নাম কি–মিথেন
45. নদীর জলে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর নাম কি–কলিফর্ম
46. শিশা দূষণে কোন রোগ হয়–ডিসলেক্সিয়া
47. ক্লোরাইড দূষণে কি রোগ হয়–ফ্লুরোসিস
48. বিপদজনক বজ্য ফেলার জায়গা কে কি বলে–সিকিউর ল্যান্ডফিল্ড
49. গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান্ট কবে গ্রহণ করা হয়–১৯৮৬ সালের ১৪ জানুয়ারি
50. যে পদ্ধতির মাধ্যমে দূষিত গ্যাস আদ্রতা প্রয়োগ না করেই পরিষ্কার করা হয়–শুষ্ক স্ক্রাবিং
51. ল্যান্ডফিল থেকে কোন গ্যাস উৎপন্ন হয়–মিথেন
52. একটা সংক্রামক বর্জ্য–ব্যবহারিত সিরিঞ্জ
53. একটা পুন:নবীকরণযোগ্য বজ্যের উদাহরণ– ফ্লাই অ্যাশ
54. বর্জ্য কাগজ কোন ধরনের বর্জ্য–জীব বিশ্লেষ্য
55. কাগজ কি বর্জ্য–পুন: চক্রি বর্জ্য
56. ল্যান্ডফিলের বর্জ্য পদার্থ ধোয়া জল কে কি বলে– লিচেট
57. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিগুলো হল– 4R
58. স্কাবার কোন দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র–বায়ু
59. একটা পরিবেশ বান্ধব বর্জ্য– চট
60. আউচ আউচ রোগ কোন দূষণের ফলে ঘটে–ক্যাডমিয়াম
61. রাসায়নিক সার কি ধরনের বর্জ্য–কৃষি বর্জ্য
62. গ্যাসীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নাম–স্কাবার
63. জীবাণু দ্বারা বর্জ্যের বিয়োজনকে কি বলে–কম্পোস্টিং
64.বর্জ্য কে সম্পদে পরিণত করার পদ্ধতির নাম কি–বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
65. অ্যারোজল কোন ধরনের বর্জ্য–শিল্প জাত
66. মিনামাটা দুর্ঘটনা কোন রাসায়নিকের কারণে ঘটেছিল–পারদ
67. কার্বন কেমন বর্জ্য–অবিশ্লেষ্য
68. বিয়োজিত হয় না এমন বর্জ্য কে কি বলে–অবিশ্লেষ্য
69. সিজিয়ান কোন ধরনের বর্জ্য–তেজস্ক্রিয়
70. সালফার–ডাই–অক্সাইড কেমন বর্জ্য–গ্যাসীয়
71. একটা জৈব বর্জ্য–গোবর
72. হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায় কোন দূষণে ক্যাডমিয়াম
2 নম্বর
1.ভরাট করন বা ল্যান্ডফিল্ড কাকে বলে?
কোন উন্মুক্ত নীচু জায়গা বর্জ্য পদার্থ দ্বারা ভরাট করার পদ্ধতিকে ল্যান্ডফিল বা ভরাটকরণ বলে। সংগ্রহ করা বর্জ্য পদার্থকে নষ্ট করতে ভরাটকরণ বা স্যানিটারি ল্যান্ডফিল খুব গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়া চলার সময় মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় । ইহা উত্তর কলকাতায় দেখা যায়।
2.ইনসিনারেশন কাকে বলে?
ইনসিনারেশন হলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি পদ্ধতি যেখানে বর্জ্যকে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উচ্চ তাপমাত্রায় (সাধারণত ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি) পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়, যা বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস এবং শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত হয়।
3. 4 R কাকে বলে?
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে “4R” বলতে হ্রাস (Reduce), পুনরায় ব্যবহার (Reuse), পুনর্ব্যবহার (Recycle) এবং পুনরুদ্ধার (Recover) এই চারটি নীতিকে বোঝায়, যা পরিবেশের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
4.জীব বিশ্লেষ্য বর্জ্য কাকে বলে?
জীববিশ্লেষ্য বর্জ্য পদার্থ হল সেই সমস্ত বর্জ্য পদার্থ যা যেকোনো জীব, মূলত আণুবীক্ষণিক বিয়োজক দ্বারা বিশ্লেষ্য হতে পারে। উদাঃ—উচ্ছিষ্ট খাদ্য বস্তু।
যে সমস্ত বর্জ্য পদার্থ কোনো জীব দ্বারা বিয়োজিত হয় না তাদের জীব অবিশ্লেষ্য বর্জ্য পদার্থ বলে। উদাঃ—কৃত্রিম পলিমার, প্লাস্টিক, ডিডিটি, কাচ ইত্যাদি।
5. তেজস্ক্রিয় বর্জ্য কাকে বলে?
তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হল এমন বর্জ্য যা তেজস্ক্রিয় পদার্থ বা তেজস্ক্রিয় পদার্থ দ্বারা দূষিত, যা আর ব্যবহার করা হয় না বা ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত নয়। যেমন ইউরেনিয়াম।
6. ম্যানিওর পিট কাকে বলে?
ম্যানিওর পিট হলো গর্ত বা একটি বিশেষ কাঠামো, যেখানে পশুর বর্জ্য (যেমন গোবর, প্রস্রাব) এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ (যেমন খড়) জমিয়ে রাখা হয়। এটি পশুর খামার পরিষ্কার রাখতে এবং এই বর্জ্যকে পচন ঘটিয়ে পরবর্তীতে সার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করা হয়।
7. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা
সংজ্ঞা: বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পুনর্ব্যবহার এবং চূড়ান্তভাবে নিষ্কাশন করা হয়।
৪. কম্পোস্টিং কাকে বলে?
জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য পদার্থগুলি জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে হিউমাসে পরিণত হলে, তাকে বলে কম্পোস্টিং পদ্ধতি। বর্জ্য জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে এই প্রক্রিয়ায় হিউমাসে পরিণত হয়। কম্পোস্টিং মূলত দুই প্রকার–
(ক) সবাত কম্পোস্টিং: বায়ুর উপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতিকে বলে সবাত কম্পোস্টিং ।
( খ) অবাত কম্পোস্টিং: বায়ুর অনুপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতির নাম অবাত কম্পোস্টিং।
9. ই বর্জ্য কাকে বলে?
বর্তমানে বিশ্বে নানান ইলেকট্রনিকস দ্রব্য ব্যবহৃত হয়। এই দ্রব্যগুলির অব্যবহৃত বাতিল অংশের মধ্যে পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ থাকে। এই জাতীয় বর্জ্যকে E waste বলে। যেমন– সার্কিট বোর্ড, টিভি বা কম্পিউটার মনিটর, কম্পিউটারের ব্যাটারি ইত্যাদি।
10.বর্জ্য পুনর্নবীকরণ কাকে বলে?
বর্জ্য পুনর্নবীকরণ বা রিসাইক্লিং (Recycling) হলো বর্জ্য পদার্থকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য উপাদানে রূপান্তর করার একটি প্রক্রিয়া, যা পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে সাহায্য করে। যেমন বর্জ্য কাগজকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা
11. স্ক্রাবার বলতে কী বোঝো?
কলকারখানার দূষিত বায়ুকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে স্ক্রাবার বলে। এই যন্ত্রটি কারখানার নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্য থেকে বিষাক্ত পদার্থকে শোধন করে। স্ক্রাবারে রাখ্য কলিচুন এবং জলের মধ্যে দিয়ে দূষিত বায়ু চালনা করলে বস্তুকণাগুলি শোষিত হয়। স্ক্রাবার দুরকমের হয়, যথা– আর্দ্র এবং শুষ্ক স্ক্রাবার।
12. স্লাজ কাকে বলে?
পয়ঃপ্রণালীর জল পরিশোধন প্রক্রিয়া বা শিল্পজাত বর্জ্য পরিশোধন প্রক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন অর্ধকঠিন অবশিষ্টাংশকে স্লাজ বলে।
13. নিষ্কাশন কি?
নিষ্কাশন বলতে কোনো জায়গা বা বস্তু থেকে অতিরিক্ত জল, আবর্জনা, বা অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিস অপসারণ বা সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
14.গ্যাসীয় বর্জ্য কাকে বলে?
যে সব গ্যাসীয় পদার্থ মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীজগতের জন্য ক্ষতিকর এবং বায়ুমণ্ডলের দূষণমাত্রা বাড়ায় তাদের গ্যাসীয় বর্জ্য বলে। যেমন– মোটর গাড়ি থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে বা দাবানলে উৎপন্ন কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড ইত্যাদি।
3 নম্বর
1. বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা আলোচনা করো।
পরিবেশকে বর্জ্য মুক্ত করতে শিক্ষার্থীকেই প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিশুমনে পরিবেশ সচেতনতা যত বাড়বে, পৃথিবী ও পরিবেশ ততই বাসযোগ্য ভূমিতে পরিণত হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীরা যেসব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলি হল–
(১) জৈব ভঙ্গুর, জৈব অভঙ্গুর, বিষাক্ত, বিষহীন বর্জ্য সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে জৈব অভঙ্গুর ও বিষাক্ত বর্জ্যগুলির ব্যবহার হ্রাস করা৷ যেমন Use & Throw পেনের পরিবর্তে কালির পেন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা।
(২) পরিবেশ পরিচ্ছন্নতায় রোগমুক্তি ঘটে। এই বিষয়ে বিদ্যালয় সচেতনতার দৃষ্টি দেখালে, বাড়ির চারপাশে বর্জ্য নিক্ষেপে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ব্যবহার করার গুরুত্ব বাড়বে।
(৩) অপ্রয়োজনীয় উদ্বৃত্ত জিনিসই বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায়। তাই পরিনিত ও প্রয়োজনীয় জিনিসই কেনার নিয়ম শিক্ষার্থীকে গড়ে তুলতে হবে।
2.বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো?
(১) বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্যজনিত দূষণ রোধ করা যেতে পারে।
(২) এর মাধ্যমে বর্জ্যজনিত দুর্গন্ধও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
(৩) বর্জ্যের পচনে মহামারি ছড়ায়। নিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মহামারির আশঙ্কাকে দূর করে।
(৪) স্তূপীকৃত বর্জ্য দৃশ্যদূষণ করে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় দৃশ্যদূষণ রোধ করা যায়।
(৫) পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
(৬) গৃহস্থালি ও পৌরসভার বর্জ্য রাস্তাঘাটকে নোংরা করে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।
(৭) বর্জ্যের মাধ্যমে জলদূষণ ঘটে ও জলবাহিত রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই, এর প্রতিকারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একান্ত প্রয়োজন।
3.বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে 3R-/4R এর ভূমিকা উল্লেখ করো?
বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি হল 3R অর্থাৎ Reduce, Reuse & Recycle-কে একত্রে বলে 3R ।
(ক) Reduce বা বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস: আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অদরকারি পদার্থ যত কমানো সম্ভব হবে, বর্জ্যের পরিমাণও তত কমবে। অর্থাৎ দ্রব্য ব্যবহারে আমাদের মিতব্যয়ী হাত হবে, অপ্রয়োজনীয় জিনিসই পরিবেশ বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায়।
(খ) Reuse বা পুনর্ব্যবহারঃ পরিবেশের কিছু কিছু উপাদান পুনর্ব্যবহারযোগ্য। যেমন– ধাতব বস্তু, কাগজ, যন্ত্রাংশ প্রভৃতি। এগুলি একবার ব্যবহারের পর পুনরায় ব্যবহার করা হয়। দ্রব্যের পুনর্ব্যবহার সম্পদের সঞ্চয় বাড়ায়, তাই অপুনর্ভব সম্পদগুলিকে সাশ্রয় করা ও পুনর্ব্যবহার খুব জরুরি।
(গ) Recycle বা পুনর্নবীকরণঃ পুনর্নবীকরণ বলতে বোঝায় বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোনো ব্যবহৃত দ্রব্যের পুনরায় ব্যবহারপযোগ্য সম্পদে পরিণত করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া। যেমন কাচ, ধাতু, প্লাস্টিক, কাগজ, ছেড়া কাপড় থেকে পুনরায় অনুরূপ দ্রব্য উৎপাদন সম্ভব।
(ঘ) Recover(উদ্ধার করা): বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন করা (যেমন: বায়োগ্যাস, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ) সার তৈরি (কম্পোস্টিং) এর মাধ্যমে জৈব বর্জ্য পুনরুদ্ধারশিল্পে ব্যবহারের জন্য মূল্যবান উপাদান সংগ্রহ করা
4. ভাগীরথী–হুগলি নদীর উপর বর্জ্যের প্রভাব আলোচনা করো?
গঙ্গার একটি শাখা ভাগীরথী–হুগলি। গঙ্গাসহ ভাগীরথী–হুগলি নদীর দুই তীরের অসংখ্য কলকারখানা এবং বসতি ও পৌর এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণে ময়লা জল, রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি প্রতিদিন নদীতে এসে মিশছে। এ ছাড়াও নদীতে মানুষ ও জীবজন্তুর মৃতদেহ নিক্ষেপ, প্রতিমা নিরঞ্জন, পশুস্নান সহ নানা ধরনের আবর্জনা নিক্ষেপ, কৃষিজমি থেকে সার ও কীটনাশক ধোয়া জল ভাগীরথী–হুগলি নদীতে মিশছে। এর ফলে এই নদীতে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। যেমন–
১)নদীর জলের দূষণ: নানা প্রকার বর্জ্য পদার্থ মেশার ফলে নদীর জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটে জল সাংঘাতিকভাবে দূষিত হচ্ছে।
২)নদীর নাব্যতা হ্রাস: নদীগর্ভে বর্জ্য পদার্থগুলি জমা হওয়ার ফলে নদীর গভীরতা হ্রাস পেয়ে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
৩) জলবাহিত রোগের সংক্রমণ: ভাগীরথী–হুগলির জল পানীয় জল হিসেবে ব্যবহৃত হয় বলে তার মাধ্যমে নানা প্রকার জলবাহিত রোগের সংক্রমণ ঘটছে।
৪)জলজ বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি: বর্জ্যের মাধ্যমে নানা প্রকার বিষাক্ত পদার্থ নদীর জলে মিশে যাওয়ার ফলে জলজ বাস্তুতন্ত্র ও জীবজগৎ সমূহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
৫)কৃষিকাজে ক্ষতি: নদীর দূষিত জল সেচের কাজে ব্যবহার করার ফলে উৎপাদিত ফসলের গুণগত মানের অবনতি ঘটছে।
৬)নদী ভাঙন এবং বন্যার সম্ভাবনা বৃদ্ধি: বর্জ্য পদার্থের মাধ্যমে নদীর গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় দুই তীরে ভাঙন এবং বিভিন্ন স্থানে বন্যার আশঙ্কা অনেক বেড়েছে।
5. প্রকৃতি অনুসারে বর্জ্য এর শ্রেণীবিভাগ কর?
পরিবেশের বর্জ্য পদার্থগুলিকে বিভিন্ন ভিত্তির ওপর সাধারণত বিশেষ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায়।
১)কঠিন: পদার্থের বিভিন্ন প্রকার ভৌত অবস্থাগুলির মধ্যে কঠিন বর্জ্যের উপস্থিতি পরিবেশে সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা হয়। যেমন: গৃহস্থালির জঞ্জাল, প্লাস্টিক, পেপার, পুরোনো অব্যবহার্য আসবাবপত্র, ভাঙা বোতল ও কাচের টুকরো, চট, খবরের কাগজ ।
২)তরল: তরল বর্জ্য পদার্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নর্দমা ও নালাবাহিত গৃহস্থালির পয়ঃপ্রণালীজাত নানান তরল পদার্থ, কৃষিজমিতে কীটনাশক প্রয়োগের পরে জলসেচ দ্বারা বাহিত জল যা পার্শ্ববর্তী নদী ও জলাশয়ে মেশে। এ ছাড়াও রয়েছে নানান শিল্পজাত তরল বর্জ্য, নানান রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি।
৩)গ্যাসীয়: কলকারখানা থেকে নির্গত নানান SPM ( সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার ) বিষাক্ত ধোঁয়া, ধুলোকণা, বিষাক্ত কণা, কার্বন মনোক্সাইড, বাতানুকূল যন্ত্র থেকে নির্গত CFC প্রভৃতি বিষাক্ত গ্যাস সমূহ এই প্রকার গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থের উদাহরণ।
৪)বিষাক্ত: নানান ধরনের বর্জ্য পদার্থ, যা থেকে। বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়তার উদ্ভব হয় এবং যেগুলি একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয়, সেগুলিকে বলা হয় বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ৷
যেমন– শিল্পজাত নানান প্রকার তেজস্ক্রিয় পদার্থ (ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম প্রভৃতি।
৫)বিষহীন: যেসব বর্জ্য পদার্থগুলির বিষক্রিয়তা নেই, যেগুলি পরিবেশের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন করে না তাদের বিষহীন বর্জ্য পদার্থ বলে। এই বিষহীন বর্জ্য পদার্থগুলি সাধারণত
জৈবিকভাবে বিয়োজিত হয়। যেমন – বাজারের বর্জ্য পদার্থ,
6. পরিবেশের ওপর বর্জ্যের প্রভাব আলোচনা কর?
পরিবেশের ওপর বর্জ্যের প্রভাবগুলি হল নিম্নরূপ
১)দৃশ্যদূষণ: যেখানে সেখানে বর্জ্য জমে থাকলে সেখানকার পরিবেশ দূষিত হয়। পরিবেশের সৌন্দর্য নষ্ট হয় এবং ময়লা ও আবর্জনা দৃশ্যদূষণ ঘটায়।
২)বিষাক্ত বর্জ্যের প্রভাব: কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্য জল, মাটি ও বায়ুকে দূষিত করে। ওইসব পদার্থ পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রকে নষ্ট করে দেয়। বিভিন্ন শারীরিক রোগের সৃষ্টি করে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের নানারকম ক্ষতি সাধন করে।
3) জমির উর্বরতা হ্রাস: কৃষি, গৃহস্থালি ও শিল্পকেন্দ্রের আবর্জনা কৃষিজমিতে পড়লে ওই জমির উর্বরতা হ্রাসসহ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়ে যায়।
৪)জলের ওপর প্রভাব: বর্জ্য পদার্থ নদী, জলাশয় ও সাগরে পড়লে ওই জল দূষিত হয়ে যায় এবং জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। মাছেদের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয় এবং জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীদের মৃত্যু হয়।
৭) বর্জ্য ভরাট করণ বা ল্যান্ডফিল কাকে বলে?
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ভরাটকরণ। বর্জ্য দিয়ে জমি ভরাট করার কাজটিকে স্থাস্থ্যসম্মত জমি ভরাটকরণ বা স্যানিটারি ল্যান্ডফিল বলা হয়।
পদ্ধতি: এটি একটি বর্জ্য পদার্থ অপসারণ ও নষ্ট করার সহজ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আবর্জনার জৈব অংশগুলিকে আলাদা করে মাটির সঙ্গে স্তরে স্তরে সাজানো হয়। এই পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আবর্জনার জৈব অংশ আলাদা করে একটি 2 মিটার উঁচু স্তর বিছিয়ে দেওয়া হয়। তার ওপরে 20-25 সেমি মাটির স্তর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। মাটির মধ্যেকার জীবাণু আবর্জনার ভৌত ও রাসায়নিক পদার্থের পরিবর্তন ঘটায়। এর ফলে নানা ধরনের গ্যাস সৃষ্টি হয় যা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
সুবিধা: এর ফলে আবর্জনা বা বর্জ্য বিনষ্ট করা সম্ভব হয়। চাপা দেওয়া আবর্জনা জৈব সারে পরিণত হয়।
অসুবিধা: একই জায়গার বর্জ্য জমে থাকার ফলে তা থেকে ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের দূষণ ঘটতে পারে।
৪. গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায় লেখ?
প্রধানত যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কলকারখানার গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এজন্য যে যন্ত্রটি ব্যবহৃত হয় তার নাম স্ক্রাবার। এই স্ক্রাবার যন্ত্রে সাধারণত দুভাবে গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ বা নিষ্কাশন করা হয়, যথা—
১)আর্দ্র স্ক্রাবিং: এক্ষেত্রে কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস, ধূলিকণা প্রভৃতি বায়ুদূষককে কোনো জলীয় দ্রবণের মধ্যে চালনা করে বিশুদ্ধ বাতাস নির্গত করা হয়।
২)শুষ্ক স্ক্রাবিং: এই পদ্ধতিতে জলীয় দ্রবণ ছাড়াই বস্তুকণা ও দূষিত বাতাস স্ক্রাবারের মাধ্যমে পরিশ্রুত করে বিশুদ্ধ বাতাস নির্গত করা হয়। সাধারণত শুষ্ক স্ক্রাবিং পদ্ধতিতে অম্লধর্মী গ্যাস অপসারণ করা হয়।