অধ্যায় ৩. বারিমন্ডল
MCQ/SAQ
1.মহাসাগরের থার্মাল রেগুলেটর কাকে বলে–সমুদ্র স্রোত কে
2. শীতল সমুদ্র স্রোতের বর্ণ কি–সবুজ
3. ক্রান্তীয় সমুদ্রে কোন ধরনের সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়– উষ্ণ স্রোত
4. প্রশান্ত মহাসাগরের একটা উষ্ণ স্রোতের নাম– কুরশিয়ো স্রোত
5. এল নিনোর বছরগুলোতে ভারতে কি হয়–খরা
6. লা নিনা শব্দের অর্থ কি–ক্ষুদ্র বালিকা
7. প্রশান্ত মহাসাগরের শীতল পেরু স্রোতের অপর নাম কি–হামবোল্ড স্রোত
৪. একটি পৃথিবী বিখ্যাত সামুদ্রিক মগ্নচড়ার নাম–গ্রান্ড ব্যাংক
9. সামুদ্রিক মাছের প্রধান খাদ্য কি – প্লাঙ্কটন
10. হিমপ্রাচীর কি– উষ্ণ ও শীতল দুটি ভিন্নধর্মী সমুদ্রস্রোতের মধ্যবর্তী স্থানে যে সুস্পষ্ট বিভাজন রেখা দেখা যায় তাকে হিমপ্রাচীর বলে।
11. হিমপ্রাচীর কোন মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়–আটলান্টিক মহাসাগরে
12. কোন ধরনের স্রোতের সঙ্গে হিমশৈল ভেসে আসে–শীতল
13. কোন স্রোতের কানাডায় তুষারপাত ঘটে– শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত
14. আটলান্টিক মহাসাগরের একটা মগ্নচড়ার নাম–গ্র্যান্ড ব্যাংক রকফল ব্যাংক
15. বেঙ্গুয়ালা স্রোত কোন মহাসাগরে দেখা যায়–দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে
16. মৌসুমি স্রোত কোন মহাসাগরে দেখা যায়–ভারত মহাসাগরে
17. জোয়ার ভাটা সংক্রান্ত আইজ্যাক নিউটনের তত্ত্ব ঠিক কি –মহাকর্ষ সূত্র
18. কোন ধরনের সাগরে জোয়ার ভাটার প্রভাব দেখা যায় না– অন্তর্বর্তী সাগর গুলো তে। বালটিক কাম্পিয়ান কৃষ্ণ সাগর
19. দুটি মুখ্য জোয়ারের মধ্য সময়ের ব্যবধান কত–২৪ ঘন্টা ৫২ মিনিট
20. মুখ্য জোয়ারের কোন কোণে ভাঁটা হয়–৯০° বা সমকোণে
21. গৌণ জোয়ার হয় কোন বলের প্রভাবে–কেন্ড প্রভাবে–কেন্দ্রাতিক বলের প্রভাবে
22. একটি জোয়ার ও একটা ভাটার মধ্যে সবার ব্যবধান কত–৬ ঘন্টা ১৩ মিনিট
23. মরা জোয়ার কোন তিথিতে দেখা যায়–শুক্লপক্ষ ও কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে।
24. পেরিজির সঙ্গে সিজিগির মিলনকে কি বলে– – প্রক্সিজিয়ান
25. বান ডাকা কাকে বলে–ভরা জোয়ারের সময় সমুদ্রে যে প্রবাল জলস্ফীতি ঘটে তাকে বান ডাকা বলে।
26. বান ডাকা হয় এমন দুটি নদীর নাম–হুগলি নদী ও টেমস নদী
27. কোন ঋতুতে হুগলি নদীতে বান ডাকার তীব্রতা বেশি হয়–বর্ষা ঋতুতে
28. পৃথিবীর মোট আয়তনের কত ভাগ জল দ্বারা আবৃত–৭১%
29. পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর– প্রশান্ত মহাসাগর
30. উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে কি দেখা যায় ঘন কুয়াশা ও ঝড় বৃষ্টি
31. উষ্ট ও শীতল সমুদ্রস্রোতের মিলনস্থলকে কি বলে–হিমপ্রাচীর
32. সমুদ্র স্রোতের দিকবিক্ষেপের কারণ–পৃথিবীর আবর্তন
33. দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত দেখা যায় কোন সাগরে–প্রশান্ত মহাসাগরে
34. নিরক্ষীয় স্রোতের উৎপত্তির প্রধান কারণ–আয়ন বায়ু
35. ঘন কুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝা সৃষ্টি হয় এমন একটা উপকূল অঞ্চলের নাম–নিউফাউন্ডল্যান্ড
36. পৃথিবীর বৃহত্তম মগ্নচড়া–গ্র্যান্ড ব্যাংক
37. পৃথিবীর দ্রুততম সমুদ্র স্রোত–উপসাগরীয় স্রোত
38. শীতল ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত দেখা যায়–প্রশান্ত মহাসাগরে
39. কালাহারি মরুভূমির সৃষ্টির জন্য কোন সমুদ্র স্রোত দায়ী–বেঙ্গুয়েলা স্রোত
40. এল নিনো শব্দের অর্থ–ছোট যীশু
41. এল নিনোর প্রভাব দেখা যায়–প্রশান্ত মহাসাগরে
42. আটলান্টিক মহাসাগরে হিমশৈল বয়ে আনে–ল্যাব্রাডর স্রোত
43. একটি ঋতুভিত্তিক সমুদ্রস্রোত–মৌসুমী স্রোত
44. জোয়ার সৃষ্টিতে চাঁদের প্রভাব সূর্যের থেকে বেশি, এটা কার তত্ত্ব অনুযায়ী–নিউটনের
45. জোয়ার ভাটার স্থায়িত্বকাল প্রায় কত ঘন্টা–ছয় ঘন্টা
46. কোন স্থানে মুখ্য জোয়ার এবং গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের পার্থক্য–১২ ঘন্টা ২৬ মিনিট
47. দুটি মুখ্য জোয়ারের মধ্য সময়ের পার্থক্য–২৪ ঘন্টা ৫২ মিনিট
48. কোন নদীতে জোয়ার দেখা যায় না–অলকানন্দা
49. নদীতে বান ডাকা হয় কোন সময়–ভরা কোটাল এর সময়
50. কোন স্থানের জোয়ার ভাটার প্রকৃত ব্যবধান–ছয় ঘন্টা
51. মরা কোটালের সময় চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর সাপেক্ষে কত ডিগ্রি কোণে অবস্থান করে–৯০ ডিগ্ৰী
52. পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব যখন সবচেয়ে কম তখন কোন জোয়ার সৃষ্টি হয়–পেরিজি জোয়ার
53. মরা কটালে জোয়ারের জলতল সাধারণ জলতলের অপেক্ষা কত পারসেন্ট কম হয় – 20%
54. মরা কোটাল হয় কোন তিথিতে–শুক্ল ও কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমি তিথি তে
55. সংযোগ অবস্থার সময় কি থাকে–অমাবস্যা
56. কোন স্রোত সমুদ্র তলের উপরিভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়– বহিঃ স্রোত
57. সমুদ্রের শীতল জল থেকে কিরূপে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়–অন্ত স্রোত
58. জাপান স্রোতের অপর নাম–কুরোশিয়ো স্রোত
59. সর্বাধিক শক্তিশালী জোড় সংঘটিত হয়–আমাবস্যাতে
60. সিজিগি শব্দের অর্থ–যোগ বিন্দু
61. সমুদ্র স্রোতগুলি কোন নিয়ন্ত্রক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না–জোয়ার ভাটা 62. একটা ভারত মহাসাগরীয় স্রোতের উদাহরণ–সোমালি স্রোত
63. চাঁদ ও পৃথিবীর নিকটতম অবস্থানকে বলে– পেরিজি
64. কোন তিথিতে জোয়ারের মাত্রা সর্বাধিক–আমাবস্যা তিথি
65. চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর সরলরৈখিক অবস্থানকে কি বলে–সিজিগি
66. ভারত মহাসাগরের সমুদ্র স্রোতের প্রধান নিয়ন্ত্রক–মৌসুমী বায়ু
67. কম প্রাবাল্যর জোয়ার সৃষ্টি হয় কোন তিথিতে–অষ্টমী তিথিতে
68. ভারতের দুটি প্রবাল দ্বীপের নাম–লাক্ষাদ্বীপ ও মিনিকয়
69. লা নিনা শব্দের অর্থ– —ক্ষুদ্র বালিকা
70. এল নিনো আবির্ভাব হয় কোন মহাসাগরে–প্রশান্ত মহাসাগরে
71. কোন দলের প্রভাবে গৌণ জোয়ার সৃষ্টি হয়–কেন্দ্র বহির্মুখী
72. সামুদ্রিক মাছের প্রধান খাদ্য কি–প্লাংটন
73. মরা কোটালের সময় চন্দ্র ও সূর্য পৃথিবীর সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে অবস্থান করে – 90 ডিগ্রী
74. সমুদ্র তরঙ্গের উত্তাল অংশটি কে কি বলে–তরঙ্গ শীর্ষ
75. কোন শীতল স্রোত তিনটি প্রধান মহাসাগরে দেখা যায়–কুমেরু স্রোত
76. সমুদ্রস্রোতের চক্র গতিকে কি বলে– জায়র
77. এল নিনো ও লালনের প্রভাব বেশি দেখা যায় কোথায়–প্রশান্ত মহাসাগরে
78. ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে দিক পরিবর্তন করে প্রবাহিত হওয়া সমুদ্রস্রোত কোনটি – মৌসুমী স্রোত
79. কোন বলের প্রভাবে গৌণ জোয়ার হয়–কেন্দ্রাতিগ
৪০. মোজাম্বিক স্রোত ও মাদাগাস্কার স্রোতের মিলিত প্রবাহ নাম কি–আগুলহাস স্রোত
81. পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে দূরত্ব সর্বাধিক হলে তাকে কি বলে– অ্যাপোজি
82. ভরা কটাল এর সময় পৃথিবীর সাপেক্ষে চাঁদ ও সূর্য কত ডিগ্রী করে হেলে থাকে -180°
83. মেক্সিকো উপসাগর এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত উষ্ণ স্রোতের নাম কি– ফ্লরিডা স্রোত
84. দ্রুততম সমুদ্র স্রোতের নাম কি–উপসাগরীয় স্রোত
85. বেঙ্গুএলা স্রোত কোন মহাসাগরে প্রবাহিত হয়–আটলান্টিক
86. ক্যানারি স্রোত প্রবাহিত হয় কোন মহাসাগরে–আটলান্টিক মহাসাগরে
87. পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে যখন চাঁদ আসে তখন তাকে কি বলে – সংযোগ
৪৪. পূর্ণিমা তিথিতে সিজিগি অবস্থান কে কি বলে–প্রতিযোগ
৪9. যে সাগরে কোন উপকূল রেখা নেই–শৈবাল সাগর
90. পৃথিবীর বৃহত্তম বাণিজ্যিক মৎস্য শিকার ক্ষেত্রটির নাম কি–গ্রান্ড ব্যাংক
91. বেরিং স্রোত প্রবাহিত হয় কোন মহাসাগরে–প্রশান্ত মহাসাগরে
92. কোটাল শব্দের অর্থ কি– সমুদ্রের জোয়ার বা প্রবল জোয়ার
93. শীতল স্রোত কিরূপে প্রবাহিত হয়–অন্ত: স্রোত
94. মাদাগাস্কার স্রোত দেখা যায় কোন মহাসাগরে– ভারত মহাসাগরে
95. সমুদ্র তরঙ্গের উৎপত্তির প্রধান কারণ কি–বায়ু প্রবাহ
96. শীতল সমুদ্র স্রোতের বর্ণ কি–সবুজ
97.উষ্ণ পেরু স্রোতের অপর নাম–হামবোল্ড স্রোত৷
98. ক্যালিফোর্নিয়া স্রোত প্রবাহিত হয় কোন্ মহাসাগরে–প্রশান্ত মহাসাগরে 99.ল্যাব্রাডর স্রোত একপ্রকার–শীতল স্রোত
100. বায়ুমণ্ডল ও ভূমিকম্পের প্রভাবে সমুদ্রজলের উল্লম্বদিকে পর্যায়ক্রমিক উত্থান ও পতনকে বলে–সমুদ্র তরঙ্গ
101.সামুদ্রিক জলরাশির প্রায় নিয়মিতভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হওয়াকে বলে–সমুদ্র স্রোত
102.সমুদ্রের বুকে জলে নিমজ্জিত যে বিশাল বিশাল চড়ার সৃষ্টি হয়, সেগুলিকে বলে–মগ্নচড়া
103. নিরক্ষীয় অঞ্চলে সমুদ্রস্রোত হল– পৃষ্ঠস্রোত
104. গ্র্যান্ড ব্যাংক একটি– মগ্নচড়া
105. মহাসাগরগুলিতে নিরক্ষীয় স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে যে বায়ুর প্রভাবে–আয়ন বায়ু
106 পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব– 3.84 লক্ষ কিমি
107. জোয়ারভাটা সৃষ্টির প্রধান কারণ–চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণ
108. চাঁদের প্রত্যক্ষ আকর্ষণে কোনো স্থানে যে জোয়ার হয়, তাকে বলে–মুখ্য চান্দ্র জোয়ার
109. একই স্থানে দিনে ক–বার জোয়ার ও ক–বার ভাটা হয়–দু–বার জোয়ার ও দু–বার ভাটা
110. চাঁদ পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে– 27,1/3 দিন
111. পশ্চিমবঙ্গের কোন্ নদীতে বান ডাকে–হুগলি
112. হুগলি নদীতে খাঁড়াষীড়ির বান দেখা যায়–বর্ষাকালে
113. কতদিন অন্তর ভরা কোটাল হয়-15 দিন
114. জোয়ারে স্রোত প্রবাহিত হয় কোন দিক থেকে কোন দিক–পূর্ব থেকে পশ্চিমে
115. জোয়ারের জল নদীপথে প্রবাল বেগে প্রবেশ করলে তাকে কি বলে–বান ডাকা
116. বেশি লবণাক্ত ভারী জল কি রূপে প্রবাহিত হয়–অন্তঃস্রোত রূপে
117. অমাবস্যার জোয়ার পূর্ণিমার জোয়ার এর চেয়ে–প্রবাল হয় 118. সারাসারি বানের জল কত মিটার উঁচু হয়–৬ থেকে ৯ মিটার
119. চন্দ্রের পেরিগি অবস্থানে জোয়ার কে কি বলে–পেরিজিয়ান
120. চন্দ্রের এ্যাপোগি অবস্থানে জোয়ার কে কি বলে–আপোজিয়ান
121. ভরা কোটাল কোন তিথিতে হয়–আমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে
122. সিজিগি কি–পৃথিবী চাঁদ ও সূর্য যখন একটি সরলরেখায় অবস্থান করে তখন সেই অবস্থানকে সিজিগি বলে।
123. কেন্দ্রাতিগ বল কাকে বলে–পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতমুখী ক্রিয়াশীল বলকে
124. হিমপ্রাচীর কোন মহাসাগরে দেখা যায়–আটলান্টিক মহাসাগরে
125. পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর কোনটি–প্রশান্ত মহাসাগর
126. পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর কোনটি–আটলান্টিক মহাসাগর
127. অন্তঃস্রোত কাকে বলে–সমুদ্রের নিচের অংশ দিয়ে প্রবাহিত স্রোতকে অন্তঃস্রোত বলে
128. হিমশৈল কি–সমুদ্রে ভাসমান বরফের স্তুপ
129. গ্র্যান্ড ব্যাংক কি জন্য বিখ্যাত–বাণিজ্যিক মৎস্য শিকারের জন্য
130. মুখ্য জোয়ার কাকে বলে–চন্দ্র ও সূর্যের প্রত্যক্ষ আকর্ষণে সৃষ্ট জোয়ার
131. গৌণ জোয়ার কাকে বলে–পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কেন্দ্র বহির্মুখী বলের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ার
132. পৃথিবীর ওপর চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণের আনুপাতিক হার-9:4
133. জোয়ার ভাটা দেখা যায় না এমন একটা সাগর–আরব সাগর
134. পৃথিবীর ওপর সূর্যের চেয়ে চাঁদের আকর্ষণ শক্তি প্রায় কত গুণ কার্যকরী হয়–দ্বিগুণ
135. স্পৰ্পিলো সমুদ্রস্রোত কি নামে পরিচিত– একম্যান স্পাইরাল
136. ভরা জোয়ার সৃষ্টির মূল কারণ–চাঁদ ও সূর্যের পরস্পর বিপরীতমুখী টান
2 নম্বর
1.শৈবাল সাগর কি?
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে 20°-35° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অংশে যে স্রোতহীন সামুদ্রিক আগাছা ও শৈবাল দ্বারা পূর্ণ জলজ অঞ্চল রয়েছে, তাকে শৈবাল সাগর বলে।
2. বান ডাকা কি?
ভরা কোটালের সময় সমুদ্রের জল নদীর মোহনা দিয়ে নদী প্রবাহের বিপরীত দিকে নদীখাতের মধ্য দিয়ে প্রবল জলোচ্ছ্বাস ঘটিয়ে প্রবেশ করে। একেই বান ডাকা বলে। বর্ষাকালে এর তীব্রতা অধিক হয়। বর্ষাকালে হুগলি নদীতে এমনিতেই জল প্রবাহ বেশি থাকে।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদী, ইংল্যান্ডের টেমস নদী, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী ও চিনের ইয়াং–সি–কিয়াং প্রভৃতি নদীতে বান ডাকে
3.হিমশৈল কি?
সমুদ্রের জলে ভাসমান বিশাল বা ক্ষুদ্রাকৃতির বরফের স্তূপকে বলা হয় হিমশৈল। সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈলের মোট আয়তনের মাত্র 1/9 ভাগ অংশ জলের ওপরে থাকে।
প্রভাব– এইরকম একটি প্রকাণ্ড হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগেই বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিক তার প্রথম যাত্রাতেই গভীর সমুদ্রে ডুবে যায়।
4. হিমপ্রাচীরের সংজ্ঞা?
উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূল দিয়ে পাশাপাশি প্রবাহিত উত্তরমুখী উপসাগরীয় স্রোতের ঘন নীল জল এবং দক্ষিণমুখী শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের সবুজ জলের মাঝে এক বিভাজন রেখা বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়। এই বিভাজন রেখাকে হিমপ্রাচীর‘ বলা হয়। এর সাথে জলস্তম্ভের উচ্চতার কোনো সম্পর্ক নেই।
5. মগ্নচড়া কি?
সমুদ্রের উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের সংস্পর্শে এসে গলে যায় এবং হিমশৈলের মধ্যে আবদ্ধ থাকা বিভিন্ন আকৃতির নুড়ি, কাঁকর, পলি, পাথর প্রভিতি সমুদ্রতলে দীর্ঘকাল ধরে জমতে জমতে যে অগভীর চড়া সৃষ্টি হয়, তাকে মগ্নচড়া বলে।
6. অক্লুসান কাকে বলে?
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ভিন্নধর্মী বায়ুপুঞ্জ অথবা উষ্ণ বায়ু পুঞ্জ শীতল বায়ু পুঞ্জ সীমান্ত বরাবর সংঘর্ষ উপনীত হলে শীতল বায়ু পুঞ্জ এর মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং ঘূর্ণবাতের শক্তি বৃদ্ধি করে এরূপ উষ্ণ বায়ু পুঞ্জ অবরুদ্ধ অবস্থাকে অক্লুসান বলে
7. গায়র কি?
‘গায়র’ হল একটি সমতল– –শীর্ষযুক্ত, বিলুপ্ত বা মৃত অগ্ন্যুৎপাত যা সমুদ্রের তলদেশের উপরে প্রায় ১০০০ মিটার (৩২০০ ফুট) উঁচু হয়।
৪. ষাড়াষাড়ি বান কি?
বর্ষাকালে ভরা কোটালের দিন ভাগীরথী–হুগলি নদীর গতিপথের বিপরীত দিক থেকে ভীষণ গর্জন করে যে প্রবল বান ভাসে তাকে ষাঁড়াষাঁড়ির বান বলে ।
নামকরণ: এই বান খুব উঁচু হয়, কখনো–কখনো 6-8 মিটার পর্যন্ত এবং দুটি প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের মধ্যে লড়াইয়ের সময় যে ভীষণ গর্জন শোনা যায়, এই বান আসার সময় অনেকটা সেই রকম আওয়াজ পাওয়া যায় বলেই একে ষাঁড়াফাঁড়ির বান বলা হয়৷
9. সিজিগী কি?
জ্যোতির্বিজ্ঞান অনুসারে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী নিজেদের কক্ষপথে পরিক্রমণ করতে করতে যখন চাঁদের কেন্দ্র, পৃথিবীর কেন্দ্র এবং সূর্যের কেন্দ্র একই সরলরেখায় অবস্থান করে, তখন সেই অবস্থানকে সিজিগি বলা হয় ।
10. পেরিজি কি?
চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পথে পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে দূরত্ব যখন সবচেয়ে কম হয়। তখন চাঁদের ঐ নিকটতম অবস্থানকে পেরিজি বলে।
11. সংযোগ এবং প্রতিযোগ কাকে বলে?
সংযোগ অবস্থান: অমাবস্যা তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একই দিকে অবস্থান করে বলে এই অবস্থানকে সংযোগ অবস্থান বলা হয়।
প্রতিযোগ অবস্থান:পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী চাঁদ ও সূর্যের ঠিক মাঝখানে অবস্থান করে বলে এই অবস্থানকে প্রতিযোগ অবস্থান বলা হয় ।
12.অ্যাপোজি কাকে বলে?
চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পথে পৃথিবী ও চাঁদের মধ্যে দূরত্ব যখন সবচেয়ে বেশি হয় তখন চাঁদের দূরঅবস্থানকে অ্যাপোজি বলে।
3 নম্বর
1. অমাবস্যার জোয়ার পূর্ণিমার জোয়ারের তুলনায় তীব্র হয় কেন?
পূর্ণিমা তিথিতে পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে থাকে। এই অবস্থায় পৃথিবীর যে অংশ চাঁদের ঠিক সামনে আসে সেখানে চাঁদের মুখ্য জোয়ার ও সূর্যের গৌণ জোয়ার হয়। একে পূর্ণিমা তিথির ভরা জোয়ার বলে।
অন্যদিকে অমাবস্যা তিথিতে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীর একই দিকে ও একই সরলরেখায় অবস্থান করে। তাই চাঁদ ও সূর্যের মিলিত টানে পৃথিবীর জলরাশি বেশি আকর্ষিত হয়। তাই পূর্ণিমা অপেক্ষা অমাবস্যার জোয়ার বেশি প্রবল।
2.গ্র্যান্ড ব্যাংক মৎস্য চাষের জন্য অনুকূল হওয়ার কারণ?
কানাডার পূর্ব উপকূলের অদূরে নিউফাউন্ডল্যান্ডের কাছে আটলান্টিক মহাসাগরের অগভীর অংশে সৃষ্টি হয়েছে গ্র্যান্ড ব্যাংক মগ্নচড়া, যা মৎস্য চাষের জন্য বিখ্যাত। এই মগ্নচড়া মৎস্য চাষের জন্য অনুকূল হওয়ার কারণগুলি হল—
বিশালতা ও গভীরতা: গ্র্যান্ড ব্যাংক মগ্নচড়াটির আয়তন প্রায় 96000 বর্গকিমি এবং এখানে জলের গভীরতা 90 মিটারের কম, যা মৎস্য চাষের জন্য অনুকূল।
অনুকুল তাপমাত্রা: নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে সারাবছর মাছের বসবাসের উপযাগেী অনুকূল তাপমাত্রা থাকে।
প্ল্যাংকটনের প্রাচুর্য: উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত ও শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের মিলনের ফলে
এখানে মাছের খাদ্য প্ল্যাংকটনও প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। খাদ্যের প্রাচুর্যের জন্য গ্র্যান্ড ব্যাংককে কেন্দ্র করে নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলে বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক মাছ (যেমন—কড, হেরিং, ম্যাকারেল, হ্যাডক, হ্যালিবাট প্রভৃতি) ভিড় করে। এর ফলে সমগ্র এলাকাটি মৎস্যক্ষেত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
৩.কোন স্থানে প্রতিদিন একই সময়ে জোয়ারভাটা না হওয়ার কারণ?
পৃথিবীর চারিদিকে একবার ঘুরে আসতে চাদের সময় লাগে প্রায় 27 দিন। পৃথিবী যখন 24 ঘণ্টায় একবার নিজের মেরুদণ্ডের চারদিকে আবর্তন করে তখন চাঁদ নিজের অক্ষের 1 অংশ বা 360° : 27 = 13° (প্রায়) পথ এগিয়ে যায়। এই 13° পথ অতিক্রম করতে পৃথিবীর আরও (13° x 4 মিনিট = 52 মি.) 52 মিনিট সময় লাগে। সুতরাং পৃথিবীর যে–কোন স্থান 24 ঘণ্টা 52 মিনিট পর পর একবার করে চাঁদের সামনে আসে। তাই দুটি মুখ্য জোয়ার বা দুটি গৌণ জোয়ারের মধ্যে সময়ের ব্যবধান 24 ঘণ্টা 52 মিনিট। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট স্থানে একদিন যে সময়ে মুখ্য জোয়ার হয় সেইদিন তার 12 ঘণ্টা 26 মিনিট পরে সেখানে গৌণ জোয়ার হয়। আর, যে দুই স্থানে জোয়ার হয় তাদের সমকোণে অবস্থিত স্থান দুটিতে ভাটা হয়। ফলে কোন জায়গায় জোয়ারেসমুদ্র উপকূলে র জলরাশি যখন একই স্থানে অবস্থান করে দুই এক মিটার ওঠা নামা করে, তখন তাকে সমুদ্র তরঙ্গ বা ঢেউ বলে। র প্রায় 6 ঘণ্টা 13 মিনিট পরে সেখানে ভাটা হয়।
4.ভরা জোয়ার ও মরা জোয়ারের পার্থক্য?
|
ভরা জোয়ার / ভরা কোটাল |
বিষয় |
মরা জোয়ার/মরা কোটাল |
|
অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে ভরা জোয়ার দেখা যায়। |
তিথি |
কৃষ্ণ শুক্লপক্ষের অষ্টমি তিথিতে মরা জোয়ার বা মরা কোটাল দেখা যায়। |
|
সূর্য পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় |
সূর্য ও চাঁদের |
সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীর অবস্থানের |
|
প্ৰবল জলোচ্ছ্বাস ও প্লাবনের সম্ভাবনা বেশি। |
জলোচ্ছ্বাস |
জলোচ্ছ্বাস কম বা প্রায় নেই। |
|
স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। |
জলের উচ্চতা |
স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। |
5. সমুদ্র স্রোত ও সমুদ্র তরঙ্গের পার্থক্য?
|
সমুদ্র স্রোত |
বিষয় |
সমুদ্র তরঙ্গ |
|
বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের প্রভাব জনিত কারণে সমুদ্রের ওপরের জলরাশির একই স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়মিত ভাবে প্রবাহিত হওয়া কে সমুদ্রস্রোত বলে। |
সংজ্ঞা |
সমুদ্র উপকূলের জলরাশি যখন একই স্থানে অবস্থান করে দুই এক মিটার ওঠা নামা করে, তখন তাকে সমুদ্র তরঙ্গ বা ঢেউ বলে। |
|
পৃথিবীর আবর্তন গতি, বায়ু প্রবাহ, সমুদ্র জলের লবনতা, ঘনত্ব ও উষ্ণতার তারতম্যের জন্য সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়। |
সৃষ্টির কারণ |
সমুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টির মূল কারণ হচ্ছে বায়ুপ্রবাহ। |
|
সমুদ্রস্রোত অনুভূমিকভাবে চলাচল করে। |
প্রকৃতি |
|
|
সমুদ্রস্রোত উপকূলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়। |
উপকূল |
সমুদ্র তরঙ্গ উপকূলের ভূভাগ কে আঘাত করে। |
|
উষ্ণ সমুদ্র স্রোত ও শীতল সমুদ্র স্রোত এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। |
শ্রেণীবিভাগ |
গঠনকারী সমুদ্র তরঙ্গ বিনাশকারী সমুদ্র তরঙ্গ এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। |
6. মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের পার্থক্য?
|
মুখ্য জোয়ার |
বিষয় |
গৌণ জোয়ার |
|
পৃথিবীর যে স্থান চাঁদের সামনে থাকে সেখানে মুখ্য জোয়ার হয়। |
স্থান |
মুখ্য জোয়ারের প্রতিপাদ বা বিপরীত স্থানে গৌণ জোয়ার হয় । |
|
মুখ্য জোয়ার মূলত চাঁদের মধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে সৃষ্টি হয়। |
কারণ |
গৌণ জোয়ার পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয। |
|
চাঁদের আকর্ষণে হয় বলে মুখ্য জোয়ারে প্ৰবল জলস্ফিতি দেখা যায়। |
জলস্ফীতি |
গৌণ জোয়ারে জলস্ফীতি অনেক কম থাকে। |
5 নম্বর
1.সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির কারণ আলোচনা কর ?
মহাসাগর ও সাগরের জলের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়মিত ও নির্দিষ্টভাবে প্রবাহিত হওয়াকে সমুদ্রস্রোত বলে। এই সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির কারণ গুলো হলো
[১] নিয়ত বায়ু প্রবাহ: আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের মতে, নিয়ত বায়ুপ্রবাহই সমুদ্র স্রোতের প্রধান কারণ। নিয়ত বায়ুপ্রবাহ এবং সমুদ্র স্রোতের গতি লক্ষ করলে দেখা যায় যে, প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রস্রোতকেও নিজের প্রবাহ পথের দিকে টেনে নিয়ে যায়, যেমন: (ক) যেসব স্থানে আয়ন–বায়ু প্রবাহিত হয় সেইসব স্থানে উত্তর–পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্ব দিক থেকে নিরক্ষরেখার দিকে সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়।
[২] পৃথিবীর আবর্তন গতি: নিজের আবর্তন গতির জন্য পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে অবিরাম ঘুরে চলেছে। পৃথিবীর আবর্তনের জন্য ফেরেলের সূত্র অনুসারে বায়ুপ্রবাহের মতো সমুদ্রস্রোতেরও গতিবিক্ষেপ ঘটে এবং সমুদ্রস্রোত সরাসরি উত্তর–দক্ষিণে প্রবাহিত হতে পারে না। পৃথিবীর আবর্তনের জন্য সমুদ্রস্রোতের গতি উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাঁ দিকে বেঁকে যায়।
[৩] সমুদ্রের জলের উষ্ণতার তারতম্য: সূর্যরশ্মি ভূপৃষ্ঠের কোথাও লম্বভাবে, আবার কোথাও হেলানো বা তির্যকভাবে পড়ে। সূর্যরশ্মির পতন কোণের এই পার্থক্যের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রের জলের উষ্ণতার মধ্যেও যথেষ্ট পার্থক্য লক্ষ করা যায়। উষ্ণতার সমতা বজায় রাখার জন্য তুলনামূলকভাবে উষ্ণ অঞ্চলের জলরাশি শীতল অঞ্চলের দিকে এবং শীতল অঞ্চলের জলরাশি উষ্ণ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।
[৪]সমুদ্রজলের লবণতার তারতম্য: সমুদ্রজলের লবণতার পরিমাণ কোথাও বেশি, কোথাও কম। কম লবণাক্ত জল হালকা বলে সমুদ্রের ওপরের অংশ দিয়ে পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোতরূপে বেশি লবণাক্ত ভারী জলের দিকে বয়ে যায়। জলের এই শূন্যতা পূরণের জন্য তখন বেশি লবণাক্ত ভারী জল সমুদ্রের নিম্নাংশ দিয়ে অন্তঃস্রোতরূপে ওই কম লবণাক্ত হালকা জলের দিকে দিয়ে অন্তঃস্রোতরূপে ওই কম লব লবণাক্ত এ বয়ে যায়। এইভাবে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
[৫] বরফের গলন: সমুদ্রের কোনো অঞ্চলে বিশালাকৃতির বরফ গলনের ফলে সেখানে সমুদ্রজলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । তখন জলের সমতা বিধানের জন্য সেই অতিরিক্ত জলরাশি কম জলরাশিপূর্ণ সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে ।
[৬]ঋতু পরিবর্তন : ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে কোনো কোনো অঞ্চলে সমুদ্রস্রোতের প্রবাহের দিকও পরিবর্তিত হয় । যেমন, উত্তর ভারত মহাসাগরে মৌসুমি স্রোত গ্রীষ্মকালে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে এবং শীতকালে পূর্ব দিক থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয় ।
[৭] বাষ্পীভবন: উষ্ণতার জন্য সমুদ্রের কোনো অংশে বাষ্পীভবন বেশি হলে সেখানে জলের অভাব পূরণ করার জন্য চারদিক থেকে শীতল স্রোত ছুটে আসে, ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়
2.সমুদ্রস্রোতের প্রভাব আলোচনা করো?
সমুদ্রস্রোতের প্রভাব মানবজীবনের ওপর সমুদ্রস্রোতের নিম্নলিখিত প্রভাবগুলি লক্ষ করা যায়
(১)বরফমুক্ত বন্দর – উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে সংশ্লিষ্ট উপকূলের বন্দরগুলি শীতকালেও বরফমুক্ত থাকে। যেমন উষ্ণ উত্তর আটলান্টিক স্রোতের প্রভাবে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের অধিকাংশ বন্দর বরফমুক্ত থাকায় সারাবছরই ব্যবহার করা যায়।
তর জন্য আহাজ
(২)নৌ–চলাচলের সুবিধা – উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের জন্য জাহাজ চলাচল সহজতর হয়। এর ফলে জ্বালানির সাশ্রয় হয়। আটলান্টিক মহাসাগরের অনুকূল উয় স্রোতকে অনুসরণ করে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক জাহাজ যাতায়াত করে।
(৩)জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ – কোনো অঞ্চলের পাশ দিয়ে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হলে জলবায়ু উষ্ণ হয়। আবার বিপরীতভাবে, শীতল স্রোত প্রবাহিত হলে জলবায়ুও শীতল হয়। যেমন শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলে বায়ুর উষ্ণতা কমে ও উষ্ণ কুরোশিয়ো স্রোতের প্রভাবে জাপানের পশ্চিম উপকূলে বায়ুর উষ্ণতা বাড়ে।
(৪)বৃষ্টিপাত ও তুষারপাত — সৃষ্টি উষ্ণ স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকে বলে ওই বায়ু স্থলভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু শীতল স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শুষ্ক বলে বৃষ্টিপাত হয় না, তবে মাঝে মাঝে তুষারপাত হয়। আফ্রিকার দক্ষিণ–পশ্চিম দিকে নামিবিয়া উপকূলে এই কারণে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
(৫)দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি – সাধারণত যেসব অঞ্চলে উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন ঘটে, সেখানে উয়তার পার্থক্যের জন্য ঘন কুয়াশা এবং প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝা হয়। ফলে জাহাজ বা বিমান চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। যেমন নিউফাউন্ডল্যান্ড–সংলগ্ন সমুদ্র।
(৬)মৎস্যক্ষেত্র সৃষ্টি – উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে মাছের খাদ্য প্ল্যাঙ্কটন প্রচুর পরিমাণে জন্মায়, এর ফলে মৎস্যক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। যেমন নিউফাউন্ডল্যান্ড বা জাপানের উপকূল থেকে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।
(৭)মগ্নচড়ার সৃষ্টি – শীতল স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের সংস্পর্শে এলে গলে যায়। ফলে পর মধ্যে থাকা পাথর, নুড়ি, বালি প্রভৃতি হিমশৈলের সমুদ্রবক্ষে দীর্ঘকাল ধরে জমতে জমতে উঁচু হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে। যেমন নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলের অদূরে গ্র্যান্ড ব্যাংক নামক মগ্নচড়ার সৃষ্টি হয়েছে।
(৮)হিমশৈলজনিত বিপদ – শীতল সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে যেসব বড়ো বড়ো হিমশৈল ভেসে আসে, সেগুলি জাহাজ চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। এই হিমশৈলের জন্যই বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিক ডুবে গিয়ে প্রচুর প্রাণহানি ঘটেছিল।