ayurvedic-skin-care
আয়ুর্বেদে রয়েছে ত্বক ভাল রাখার নানা পদ্ধতি
ত্বকের মাধ্যমেই আমরা অনুভব করি। ত্বক পরিচ্ছন্ন থাকলে শরীরকে ভাল রাখতে সাহায্য করবে। ত্বকের নীচেই তৈলগ্রন্থির ঘরবাড়ি।
☞খাওয়া-দাওয়ার খেয়াল রাখা প্রয়োজন। দুধ, দুধের তৈরি জিনিস (পনির, ছানা, মিষ্টি, দই, মাখন ইত্যাদি), কাঠবাদাম, আখরোট, নারকেল, ডাবের জল খান নিয়মিত। এইসব খাবার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখে।
☞প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে দু’চামচ তিলবাটা খেলে তৈলগ্রন্থির কাজ স্বাভাবিক থাকে।
☞প্রতিদিন খান অ্যালো ভেরা জুস, ৪-৬ চামচ।
☞পালং, লেটুস, গাজর, কুমড়ো, হলুদ রঙের যে-কোনও সবজি, মরশুমি ফল ও বাদাম খেলে ত্বক ভাল থাকে।
☞ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও মাছের তেল ত্বকের বন্ধু। প্রতিদিন অন্তত ২০০ গ্রাম তাজা মাছ খান। সম্ভব না হলে খেতে পারেন কড লিভার অয়েল।
☞হরমোনাল ইমব্যালান্স থাকলে ত্বকের সমস্যা হবেই। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি • অতিরিক্ত চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে কিন্তু মুশকিল। এতে ত্বকের ক্ষতি, তবে গ্রিন টিতে কোনও অসুবিধা নেই।
☞তেলমশলা, ফাস্ট ফুড যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
☞বর্ষার জল ত্বকের শত্রু। এই সময় বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ হয়। প্রতিদিন স্নানের সময় নারকেল তেলের সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে মাখুন। বৃষ্টিতে ভিজলেও স্নান করে এই তেল মাখতে পারেন।
☞বর্ষা কালে স্নানের জলে নিমপাতার রস বা কর্পূর মেশান। র্যাশ, চুলকানি আর ইনফেকশন হবেই না • স্ট্রেস, অনিদ্রা থেকে চোখের নীচে কালি পড়ে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। সেইসঙ্গে প্রয়োজন যত্নেরও। শসার রস বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন এই রসে তুলো ভিজিয়ে চোখের ওপর রাখুন ১৫ মিনিট। দু’এক সপ্তাহেই উপকার পাবেন।
☞অতিরিক্ত ঘামলেই গায়ে দুর্গন্ধ। এর হাত থেকে বাঁচতে মাখুন তেজপাতাবাটা আর চন্দনবাটা প্রতিদিন যষ্টিমধু খেলে ত্বক ভাল থাকে।
☞চন্দন, পদ্ম, নাগকেশর, মঞ্জিষ্ঠা, খস ও চিনি প্রতিদিন পরিমাণমতো খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
☞গ্রীষ্মপ্রধান দেশের আর এক সমস্যা সানবার্ন। তরমুজের সাদা অংশ রোদ থেকে ফিরে সারা গায়ে ঘষুন। বিশেষ করে, যেসব জায়গায় রোদ সরাসরি লাগে। তরমুজের রস পোড়াদাগও তোলে।
☞খাঁটি নারকেল তেলও সানবার্ন তোলে।
☞ক্ষীরবলা আর চন্দন তেল সমান উপকারী। পাবেন যে-কোনও আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকানে।
☞২-৩ ফোঁটা তিল ও নিম তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সানস্ক্রিনের কাজ করে।
☞অ্যালো ভেরা, চন্দন, হলুদ আর গোলাপজল মিশিয়ে মাখুন। এটি সানবার্ন ও গরমের সমস্যায় লড়তে সাহায্য করে।
☞র্যাশ আর ঘামাচি হলে লাগান চন্দনবাটা; এটি শরীর ঠান্ডা রাখে।
☞তিরিশ পেরোলেই চামড়ায় বলিরেখা পড়তে শুরু করে। ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যাওয়াই এর মুখ্য কারণ। এই বয়সে প্রতিদিন আদাকুচি মধুর সঙ্গে খান। এটি চামড়া টান টান রাখতে সাহায্য করে।
☞তুলসীপাতা অ্যান্টি-এজিং। প্রতিদিন খেলে উপকার পাবেন।
☞মাখতে পারেন পেঁপে আর পাকাকলার পেস্টও।
☞টাটকা আখের রসে হলুদ মিশিয়ে মাখলে চামড়ায় রিংকল পড়বে না।
☞প্রতিদিনের ডায়েটে পর্যাপ্ত মিনারেল, জলীয় উপাদান ও প্রোটিন থাকা প্রয়োজনীয়। নাহলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে তাড়াতাড়ি।
☞পালং শাক অ্যান্টি-রিংকল। প্রতিদিন খেলে চামড়ার ইলাস্টিসিটি বজায় থাকে নারকেল তেল চামড়ার বয়স ধরে রাখা যায়।
☞রসুন চামড়া ভাল রাখে এবং সংক্রমণ আটকায়।
☞টোম্যাটো, কুমড়োর বীজে থাকে ভিটামিন এ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড।
☞ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কাটাতে মাখুন চন্দন, হলুদবাটা ও কাঁচা দুধ।
☞রুক্ষতা কাটাতে লাগাতে পারেন অ্যালো ভেরা, নিম, চন্দন ও গোলাপজলের মিশ্রণ।
☞দিনে একবার মধু মাখলেও ত্বকে আর্দ্রতা থাকবে।
☞ড্রাই স্কিন হলে ডায়েটে রাখুন শসা ও টোম্যাটো।
☞মেচেতা বা পিগমেন্টেশনে দারুণ কাজ দেয় বট গাছের অঙ্কুর। বাজারে খুঁজলে পাবেন। কাছাকাছি গাছ থাকলে গাছের ঝুরির একদম শেষদিক থেকে কচি অংশ কেটে নিন। অঙ্কুরবাটার সঙ্গে মুসুর ডালের পেস্ট, অল্প জায়ফলবাটা মেশালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। কালছে ছোপও মিলিয়ে যায়।
☞মধুর সঙ্গে মঞ্জিষ্ঠাবাটা মিশিয়ে মেচেতার ওপর লাগান প্রতিদিন, উপকার পাবেন।
☞মুসুর ডাল দুধে ভিজিয়ে বেটে নিয়ে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার কর…
☞ত্বকের যে-কোনও সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করুন কুমকুম আদি তৈলম। আয়ুর্বেদিক ওষুধের দোকানে পাবেন।
☞ব্রণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে ধনে ও বচ । প্রতিদিন নিয়ম করে খান।
☞ব্রণ হলে শিমুলগাছের কাঁটা পেস্ট করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
☞কারওর শীত কালে কারওর সারাবছর গোড়ালি ফাটে। সারাবছর পায়ে মালিশ করুন ঘি আর মধুর মিশ্রণ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে অবশ্যই পা ভাল করে পরিষ্কার করে নেবেন।
☞ফাটা গোড়ালির সমস্যায় লাগাতে পারেন মোম, শিলাজিৎ, ঘি, গুড়, গুলগুল, গেরিমাটি ও ধুনো। সমান পরিমাণে একসঙ্গে মিশিয়ে।
☞অ্যালার্জি হলে তুলসীপাতার রস মধু দিয়ে দিনে দু’বার খান।
☞রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন একটা করে আমলকী খেতে পারেন।
☞১/৪ চামচ নিমপাতা গুঁড়ো আর ৩/৪ চামচ ইসবগুলের ভুসি একসঙ্গে মিশিয়ে এক গ্লাস জলে আধঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। প্রতিদিন সকালে খালিপেটে, দুপুরে ভরাপেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে।
☞সর্ষের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে রাখুন বনএলাচের তেল। দাদ হওয়া জায়গায় লাগালে অল্প সময়েই উপকার পাবেন।
☞তেঁতুলবিচির ছাই লাগালে ফোড়া সারে।
☞এগজিমা সারায় কালো সর্যে এবং কাচাতেঁতুলপাতাবাটা। সমপরিমাণে একসঙ্গে হুঁকোর জলে দিয়ে বেটে লাগাতে হবে।
☞অতিরিক্ত জলের কাজ করলে হাত ও পায়ে হাজা হয়। এই অবস্থায় ওলের ডাঁটার আঠা, খয়ের বা আদা বেশ করে মিশিয়ে রাতে হাজার জায়গায় লাগালে ভাল ফল পাবেন।
☞হাজায় লাগাতে পারেন বাবলাপাতার ক্বাথ, অশ্বত্থের আঠা ও খয়ের। তবে সমান ভাগে মিশিয়ে গরম করে লাগাতে হবে।
☞শ্বেত করবীর পাতা ও সোন্দলপাতা ঘোল দিয়ে বেটে সারাগায়ে মেখে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঘামাচি মরে যায়, চুলকানিও হয় না।
☞চুলকানি ও ঘামাচিতে দূর্বা ও তুলসীপাতাবাটা কাগজিলেবুর রসে মিশিয়ে মাখতে পারেন।
☞গরম কালে প্রতিদিন খালিপেটে চিরতা ভেজানো জলে সামান্য মিছরি দিয়ে খেলে এই ধরনের চামড়ার অসুখ এড়িয়ে চলা যায়।
☞পানের বোঁটায় চুন লাগিয়ে আঁচিলের ওপরে ঘষলে ভাল ফল পাওয়া যায়
☞আঁচিলে ঘা হলে লাগাতে পারেন রেড়ির তেল।
☞ছুলি সারাতে কমলালেবু আর চাঁপাফুল সমপরিমাণে একসঙ্গে বেটে তিন-চারদিন মাখুন।
☞২৪ গ্রাম মুলোর বীজ, ২৪ গ্রাম সোহাগা ও ৬ গ্রাম মনসাবীজের আঠা, ১২৫ গ্রাম দইয়ের সঙ্গে বেটে মাখলেও উপকার পাবেন।
☞নিমপাতা জলে ফুটিয়ে ছেঁকে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে এই জল চুলের গোড়ায় লাগালে খুশকির সমস্যা মিটবে।