
বিভিন্ন রঙিন মাছের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
বিভিন্ন রঙিন মাছের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
রঙিন মাছ পাওয়া যায় সমুদ্রের নোনা জল থেকে আবার মিষ্টি জল থেকেও।
★সোর্ড টেইল : সাধারণত 9-10 সেন্টিমিটার লম্বা হয়। দেহের রঙ কমলা হলুদ হয়। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনা অপেক্ষাকৃত লম্বা হয়। পুরুষ মাছের পুচ্ছ পাখনার শেষ
পাখনারশ্মি দণ্ডাকৃতি বা তলোয়ারের মতো দেখতে হয়।
পাওয়া যায় পূর্ব মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যাঞ্চল।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5 ।
বাচ্চা প্রসবকারী মাছ। অন্য কোনো বড় প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। অ্যাকোয়ারিয়ামে ঢাকনার ব্যবস্থা রাখতে হয়।
★ প্লাটি : সাধারণত 5-6 সেন্টিমিটার লম্বা হয়। দেহের উদরাংশ ও বক্ষ্যাংশ তুলনামূলকভাবে অধিক বিস্তারিত হয়। পুচ্ছ পাখনার প্রান্ত সম্পূর্ণ গোলাকার হয়। চক্ষু দু‘টি সম্পূর্ণ গোলাকার ও মণি সমন্বিত। মণি সাদা রঙের আবরণে ঢাকা। পাওয়া যায় মধ্য আমেরিকা।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 7.0-8.5
বাচ্চা প্রসবকারী সর্বভুক মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের গোনোপোডিয়াম থাকে ও স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল রঙের হয়।
★ ব্ল্যাক মলি : সাধারণত 7-8 সেন্টিমিটার লম্বা হয়। দেহ গাঢ় কালো ও ভেলভেটের মতো চকচকে হয়। পুচ্ছ পাখনার প্রান্ত গোলাকার হয়। চক্ষু দুটি কালো রঙের হয়।
পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকার দক্ষিণভাগ ও মধ্য আমেরিকা। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5
রঙিন মাছ/173
বাচ্চা প্রসবকারী সর্বভুক মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের গোনোপোডিয়াম ও পৃষ্ঠ পাখনা স্ত্রী মাছের তুলনায় অনেক বড় হয়। জলের তাপমাত্রা সংবেদনশীল মাছ।
★ গাপ্পি : সাধারণত 4-5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ ক্ষুদ্রাকৃতি ও চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ বাদামী ও ধূসর সবুজ হয়। পাখনাগুলির আকৃতি ও রঙ খুব আকর্ষণীয় হয়। পুচ্ছ পাখনা খুব বড় ও বিভিন্ন রঙের হয়।
পাওয়া যায় মধ্য আমেরিকা ও ব্রাজিলে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5
বাচ্চা প্রসবকারী সর্বভুক। বিশেষ করে মশার লার্ভা খায়। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের গোনোপোডিয়াম থাকে ও স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল রঙের হয়।
★ টাইগার বার্ব : সাধারণত 5-7 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ গোলাপী, হলুদাভ অথবা রূপালী কালো হয়। সারা দেহে চারটি উল্লম্ব ডোরাকাটা কালো দাগ থাকে। পুচ্ছ পাখনা দ্বিধাবিভক্ত। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনাগুলি কালো ও ধূসর রঙের হয়। মুখছিদ্ৰ প্ৰান্তিক ।
পাওয়া যায় ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা ও বোর্নিওয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 20-88 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5
দলবদ্ধ মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ পাতলা হয়। পুরুষ মাছের শ্রোণি পাখনা ও তুণ্ড লাল রঙের হয়।
★ গোল্ড ফিশ : সাধারণত 20 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। সাধারণত গোল্ড ফিশের দেহের রঙ তামাটে বা লোহিত কমলা হয়। পৃষ্ঠ পাখনাটি বড় আকারের হয়। বক্ষদেশ চওড়া, প্রসারিত ও গোলাকার হয়। পাখনাগুলি পলকা হয়। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনার পিছনদিকে খাঁজ থাকে ও পাখনা রশ্মিগুলি অবিভক্ত।
পাওয়া যায় পূর্ব এশিয়া, সাইবেরিয়া এবং চীনে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 20-22 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-9.0।
বাচ্চা প্রসবকারী সর্বভুক। বিশেষ করে মশার লার্ভা খায়। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের গোনোপোডিয়াম থাকে ও স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল রঙের হয়।
★রেড টেইল ব্ল্যাক পার্ক : সাধারণত 8-12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ কালো ও লেজের রঙ লাল হয়। পুচ্ছ পাখনা দ্বিধা বিভক্ত।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া, থাইল্যাণ্ডে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.5-7.51
আন্তঃপ্রজাতির প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছ ও স্ত্রী মাছের পার্থক্য কম তবে পুরুষ মাছের পৃষ্ঠ পাখনা তীক্ষ্ণ হয়।
★ রোসি বার্ব : সাধারণত 10-12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ গোলাপী অথবা গোলাপী লাল হয়। পাখনাগুলি হলুদ আভাযুক্ত। কডাল–পেডাঙ্কল অঞ্চলে একটি ত্রিকোণাকার ছোপ বা স্পট থাকে ।
পাওয়া যায় এশিয়ায়— ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, আফগানিস্তানে। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0–8.5 ।
অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল হয়।
★ সিলভার শার্ক : সাধারণত 35 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ রূপালী হয়। পৃষ্ঠ পুচ্ছ, শ্রোণী ও পায়ু পাখনাগুলির কিনারা কালো হয়। পুচ্ছ পাখনা দ্বিধা বিভক্ত। চোখ অন্য মাছের তুলনায় খুব বড় হয়।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায়—সুমাত্রা, বোর্নিও, থাইল্যাণ্ড, মালয় উপদ্বীপ। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.5-7.0 1
সর্বভুক মাছ। খুব শান্তিপ্রিয় প্রকৃতির। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ পাতলা হয়।
* পার্ল ড্যানিও : সাধারণত 6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ হলুদ, গোলাপী অথবা রূপালী হয়। সারা দেহে হালকা হলুদ/সাদা বা নীল/লাল রঙের দুটি ডোরাকাটা দাগ থাকে। দুই জোড়া শুঁড় থাকে।
পাওয়া যায় এশিয়া মহাদেশে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 20-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 7.0-8.5 ।
সর্বভুক, দলবদ্ধ ও খুব দুরন্ত প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল রঙের হয়।
★ জেব্রা ড্যানিও : সাধারণত 6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহে জেব্রার মতো নীল– বাদামী/সাদা–কালো লম্বালম্বি দাগ থাকে। দেহে 5টি সমান মাপের নীল দাগ পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা ও মাকুর মতো গড়ন। পাওয়া যায় এশিয়ায় – ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান ও মায়নামারে। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 20-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5
সর্বভুক ও দলবদ্ধ প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। দেহের নীল দাগগুলির মধ্যবর্তী অংশ পুরুষ মাছের ক্ষেত্রে সোনালী ও স্ত্রী মাছের ক্ষেত্রে রূপালী হয়।
★ ওয়াই–লোচ : সাধারণত 8-10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ মেটে বাদামী হয়। তুণ্ডে 6টি শুঙ্গ থাকে। সারা দেহে গাঢ় বাদামী বা কালো রঙের ‘Y’ আকৃতির ছোপ থাকে। মুখের ওপরের ঠোঁট বা ওষ্ঠ বড় হয়।
পাওয়া যায় এশিয়া—ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা, বোর্নিওতে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 7.0-8.5 ।
মাংসাশী প্রকৃতির মাছ। কেঁচো খেতে খুব পছন্দ করে। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়।
★ কুলি লোচ : সাধারণত ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ কেঁচোর মতো লম্বাটে প্রসারিত ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। মাথার ওপর তিনটি কালো দাগ ও সারা দেহে গাঢ় বাদামী বা কালো রঙের দাগ থাকে। তুণ্ডে 6টি শুঁড় থাকে। আত্মরক্ষার জন্য চোখের নিচের অংশে কাঁটা থাকে।
পাওয়া যায় এশিয়ায়—ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা, জাভায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। জলের তলদেশে থাকে। প্রজননকালে স্ত্রী মাছের পেট স্ফীত হয়।
★ ক্লাউন লোচ : সাধারণত 30 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। মুখ প্রলম্বিত হতে পারে। সারা দেহে খুব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঁশ থাকে। তুণ্ডে 12টি শুঁড় থাকে। অন্ত্র অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র হিসাবে কাজ করে।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া – বোর্নিও, সুমাত্রা।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-7.01
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। জলের নিচে থাকে। জীবন্ত খাদ্য পছন্দ করে।
★ ব্ল্যাক উইডো টেট্রা : সাধারণত 10-12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ গোলাপী বা গোলাপী লাল হয়। পাখনাগুলি হলুদ আভাযুক্ত। কডাল–পেডাঙ্কল অঞ্চলে একটি ত্রিকোণাকার ছোপ বা স্পট থাকে।
পাওয়া যায় প্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ ব্রাজিল, বলিভিয়া, গুয়াপোর নদী উপত্যকা।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5 ।
অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল হয়।
★ সার্পে টেট্রা : সাধারণত 4-5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা। হলুদ রঙের উদরবিশিষ্ট চকচকে লাল রঙের দেহ। পেটের ওপরের অংশে প্রসারিত কালো ছোপ থাকে। পৃষ্ঠ পাখনার ধাত্রটি স্বচ্ছ ধূসর বা সাদা হয়। পেটের কালো ছোপটি পৃষ্ঠ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত।
পাওয়া যায় আমাজন নদীর অববাহিকা অঞ্চলে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. ‘6.0–6.8।
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছ বেশি উজ্জ্বল হয় ও পৃষ্ঠ পাখনা বড় হয়। ★ নিয়ন টেট্রা : সাধারণত 4-6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পৃষ্ঠ ও শ্রোণী পাখনার মধ্য দিয়ে লেজ পর্যন্ত লাল রঙের দাগ থাকে। লাল দাগটির ঠিক ওপরে একটি উজ্জ্বল নীল রঙের দাগ অ্যাডিপোস ফিন থেকে চক্ষু পর্যন্ত বিস্তৃত। পাখনাগুলি বর্ণহীন।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা ও পেরুতে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-8.5 ।
খুব শান্ত প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। স্ত্রী মাছের পেট গোলাকার ও বাঁকানো আকৃতির। পুরুষ মাছের পৃষ্ঠ পাখনাটি বড় ও কাস্তের মতো দেখতে হয়।
★ বুইনোস এয়ারেস টেট্রা : সাধারণত 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পরিমিত গভীর, প্রসারিত ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনা হলুদ রঙের ও পাখনা ধাত্র লাল হয়। একটি সরু রূপালী–নীল কালো দাগ প্রথম পৃষ্ঠ পাখনা থেকে পুচ্ছ পাখনার ধাত্র পর্যন্ত বিস্তৃত। পুচ্ছ পাখনায় একটি হীরক আকৃতির ছোপ থাকে। পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা – আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং প্যারাগুয়ে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-7.5
জলের সব স্তরে বসবাসকারী সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের পাখনাগুলি স্ত্রী মাছের তুলনায় বেশি উজ্জ্বল হয়।
★ সিলভার ডলার : সাধারণত 12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ উজ্জ্বল রূপালী। দেহ গোলাকার ও সামতালিক। দেহে ছোট ছোট ছোপ থাকে। পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা–আমাজন ও প্যারাগুয়ে নদীর উপত্যকায়। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-7.0 ।
এরা জলজ উদ্ভিদ খায়। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের পায়ু পাখনা স্ত্রী মাছের তুলনায় বেশি বড় হয়।
★ ডোয়ার্ফ গোরামি : সাধারণত 6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ বিস্তৃত ও পার্শ্বীয় ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ উজ্জ্বল সোনালী বা গাঢ় লাল হয়। চোয়াল ও দেহের অঙ্কীয়দেশ নীল রঙের হয়। পৃষ্ঠ ও অঙ্কীয় দেশ বরাবর অনিয়মিত লাল দাগ থাকে I বক্ষ পাখনা কমলা–লাল ও পৃষ্ঠ, পায়ু ও পুচ্ছ পাখনা আকাশী নীল ছোপ বিশিষ্ট লাল
রঙের হয়।
পাওয়া যায় এশিয়া উত্তর ও পূর্ব ভারতে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.5-7.5
সর্বভুক প্রকৃতির শান্তিপ্রিয় মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছ অপেক্ষা বড় ও উজ্জ্বল রঙের হয়। স্ত্রী মাছের পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনা গোলাকার হয়।
★ পার্ল গোরামি : সাধারণত 10-12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ বিস্তৃত ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ কমলা আভাযুক্ত বাদামী হয়। সারা দেহে ও পাখনায় রূপালী রঙের ছোট ছোট ফুটকি থাকে। দেহের মধ্যভাগ বরাবর একটি গাঢ় দাগ থাকে। শ্রোণী পাখনা সুতোর মতো সরু হয়। পায়ু পাখনা সুতোর মতো পাখনা– রশ্মিযুক্ত ও পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া–মালয়েশিয়া, থাইল্যাণ্ড, বোর্নিও, সুমাত্রায়। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-8.0 ।
সর্বভুক প্রকৃতির ও শান্তিপ্রিয় মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের পৃষ্ঠ পাখনা বড় হয়। বক্ষদেশের রঙ স্ত্রী মাছের রূপালী ও পুরুষ মাছের লালচে হয়।
★ ব্লু গোরামি : সাধারণত 15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ বিস্তৃত ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ রূপালী নীল হয়। দেহে তিনটি ছোপ থাকে। অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র থাকে।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0–8.5 ।
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের পৃষ্ঠ পাখনার অগ্রভাগ সূচালো হয়।
★ ফাইটার : সাধারণত 5-6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ বিস্তৃত ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ নীল, বাদামী বা লালচে হয়। পায়ু পাখনা মাথার পিছন থেকে পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃষ্ঠ পাখনা মাথার থেকে অনেকটা দূরে শুরু হয়। প্রতিটি পাখনা বিচিত্র রঙের ও সূত্রবৎ পাখনা রশ্মি বিশিষ্ট!
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া—কম্বোডিয়া, থাইল্যাণ্ড ।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-8.01
মাংসাশী প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। তবে একটি অ্যাকোয়ারিয়ামে ফাইটার মাছের একটি মাত্র পুরুষ মাছ রাখতে হয়। স্ত্রী মাছের তুলনায় পুরুষ মাছের রঙ উজ্জ্বল হয় ও পাখনা আকারে বড় হয়।
★ কিসিং গোরামি : সাধারণত 12-15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ জলপাই সবুজ বা হাল্কা গোলাপী হয়। ঠোঁট প্রসারণশীল, বর্ধিত ও পাতলা।
পাওয়া যায় দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া – থাইল্যাণ্ড, ইন্দোনেশিয়ায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.5-8.5 ।
সর্বভুক ও মন্থর প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়া– রিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনার অগ্রভাগ সূচালো হয়।
★ ডিসকাস : সাধারণত 15-20 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা ও গোলাকার চাকতির মতো হয়। দেহের রঙ বাদামী হয়। দেহে সমান্তরাল ফ্যাকাসে নীল দাগ থাকে। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনা শক্ত ও পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা – আমাজন নদী উপত্যকা।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 6.0-6.5 1
মাংসাশী ও শান্তিপ্রিয় প্রকৃতির মাছ। বড় অ্যাকোয়ারিয়ামে প্রতিপালন করতে হয়। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের জনন পীড়কা (প্যাপিলা) সুচালো ও স্ত্রী মাছের গোলাকার হয়।
★ অ্যাঞ্জেল : সাধারণত 10-15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা ও ত্রিকোণাকার চাকতির মতো হয়। দেহের রঙ রূপালী ধূসর হয়। চারটি প্রশস্ত কালো দাগ পৃষ্ঠপাখনা থেকে পায়ু পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনা সূচালো হয়। শ্রোণী পাখনা সুতোর মতো ও লম্বা হয়।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা—আমাজন অববাহিকার মধ্যভাগে।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 24-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 6.0–7.51
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের জনন পীড়িকা (প্যাপিলা) সূচালো ও স্ত্রী মাছের গোলাকার
হয়।
★ অস্কার : সাধারণত 30 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা ও ত্রিকোণাকার চাকতির মতো হয়। দেহের রঙ রূপালী ধূসর হয়। চারটি প্রশস্ত কালো দাগ পৃষ্ঠ পাখনা থেকে পায়ু পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনা সূচালো হয়। শ্রোণী পাখনা সুতোর মতো ও লম্বা হয়।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 23-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 6.5-7.51
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছের জনন পীড়িকা (প্যাপিলা) সূচালো ও স্ত্রী মাছের গোলাকার
হয়।
* র্যাম : সাধারণত 5-7 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা ও ডিম্বাকৃতি হয়। দেহের ও পাখনার রঙ নীল–লাল, গোলাপী হয়। পুচ্ছ পাখনাটি পাখার মতো হয়। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনা গোলাকার হয়। মাথার পিছন থেকে একটি কালো দাগ চোখ বরাবর অঙ্কীয়দেশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা – কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.5-7.51
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছের তুলনায় বড় হয় ও পৃষ্ঠপাখনার তৃতীয় পাখনারশ্মি পুরু হয়। স্ত্রী মাছের পেটের অঞ্চল গোলাপী হয়।
* ফায়ার মাউথ চিখলিড : সাধারণত 15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহ প্রসারিত, গভীর ও পার্শ্বীয়ভাবে চ্যাপ্টা হয়। দেহের রঙ ধূসর বেগুনী হয়। গলদেশ ও পেটের সামনের অংশ গাঢ় লাল রঙের হয়। পাখনাগুলি কালচে লাল ও প্রান্ত ধূসর রঙের হয়।
পাওয়া যায় উত্তর ও মধ্য আমেরিকা–মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, বেলিজে। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 21-25 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 7.0-7.51
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়। পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছের তুলনায় বড় হয় ও পৃষ্ঠ এবং পায়ুপাখনা অধিক সম্প্রসারণশীল হয়।
★ সাকার মাউথ ক্যাটফিশ বা ক্রোকোডাইল ফিশ : সাধারণত 25 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ কালো ছোপযুক্ত বাদামী হয়। মস্তকের অঙ্কীয়দেশে চোখ মুখ থাকে। পৃষ্ঠপাখনা পাখা আকৃতির হয়।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পি.এইচ. 6.0–8.5।
শাকাশী প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়। অ্যাকোয়ারিয়ামের কাচের দেওয়ালে সঞ্চিত শেওলা খেয়ে পরিষ্কার করে।
* ব্রোঞ্জ ক্যাটফিশ : সাধারণত 6.5-7 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেহের রঙ হলুদ অথবা গোলাপী হয়। দেহের অঙ্কীয়ভাগ সাদাটে ও মস্তক নীল–ধূসর রঙের হয়। পাখনাগুলি হলুদ অথবা গোলাপী রঙের হয়। পৃষ্ঠপাখনার আগে ও মস্তকের কাছে একটি বাদামী–কমলা ছোপ থাকে।
পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা–অ্যাণ্ডেস, কলম্বিয়া, ট্রিনিডাল, রিওডে লা প্লাটা। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 20-24 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
পি.এইচ. 6.0-8.0।
সর্বভুক প্রকৃতির মাছ। অন্য কোনো প্রজাতির মাছের সঙ্গে একই অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায়।
অন্যান্য রঙিন মাছের পরিচয়
★ গাম্বোসিয়া : পুরুষ মাছ সোয়া ইঞ্চি থেকে দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। স্ত্রী মাছ দু‘ ইঞ্চি থেকে আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। সমস্ত দেহে সাদার ওপর কালো ছিটেফোঁটা দাগ থাকে ও নীলাভ রঙ দেখায়। তবে ব্ল্যাকমলির সঙ্গে মিশ খেলে অনেক মাছের কালো ভাবটা বেশি দেখায়। অনেক পুরুষ মাছের লেজটা হলুদ হয়। বাকি দেখতে সাদার ওপর কালো ছিটে রঙ থাকে।
খুব শান্ত নয়। ছোট চৌবাচ্চায় প্রায় সব মাছকেই তাড়া করে বেড়ায়। অসম্ভব বাচ্চা দেয়। কমিউনিটি (সব মাছ যে চৌবাচ্চায় রাখা হয়) চৌবাচ্চায় বা অ্যাকোয়ারিয়ামে না রাখাই ভালো।
★ সায়ামিজ ফাইটার : শ্যাম দেশের মাছের রঙ ও চেহারা দেখতে এত সুন্দর যে পৃথিবীতে এর চেয়ে সুন্দর মাছ আছে কিনা সন্দেহ। লাল, সবুজ, বেগুনী, নীল, সাদা, খয়েরি ও এই সব রঙের মিশ্রণে অসংখ্য রঙের হয়।
পুরুষ মাছগুলির খুব চটকদার রঙ হয় ও লেজ ঝুলে থাকে। স্ত্রী মাছগুলির লেজ ঝুলানো হয় না। রঙ খুব উজ্জ্বল হয়।
এই মাছেরা জল থেকে অক্সিজেন নেয় না, হাওয়া থেকে অক্সিজেন নেয়। সেজন্য এদের মাঝে মাঝে ওপরে উঠতে হবেই। এই মাছ রাখার সুবিধা হচ্ছে যে এদের খুব ছোট জায়গাতে রাখা যায়। তবে দু‘টি পুরুষ মাছ একসঙ্গে না রাখা ভালো। কারণ এরা খুব মারামারি করে। তবে অন্য মাছদের সঙ্গে অ্যাকোয়ারিয়াম রাখা যেতে পারে। এরা লম্বায় দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড
যে কোনো খাবার খায়। তবে কেঁচো সবচেয়ে ভালবাসে।
★ প্যারাডাইস : এদের রঙ অনেকটা আমাদের দেশের খলসে মাছের মতো। এরা ভয়ানক বদ মেজাজী। অন্য মাছেদের সঙ্গে রাখা চলে না।
এদের পাওয়া যায় শ্যাম দেশ।
★ চাইনজ অ্যালবিনো প্যারাডাইস : প্যারাডাইসের মতো অত বদ মেজাজী নয়। তবে সকলকে অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা যায় না। এরা আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
এই মাছেদের পুরুষ ও স্ত্রী চেনা একটু শক্ত । তবে পুরুষদের সব ডানাগুলি একটু বেশি
লম্বা ও ছুঁচালো হয়। এদের বাচ্চা তুলতে হলে ঠিক ফাইটারের মতো ডিম দেবার আগে আলাদা করে রাখতে হবে না ।
★ বাম্বল বি : এদের দেখতে ঠিক বোলতার মতো অনেকটা, রঙ কালো ও হলদে ডোরা কাটা। এরা সব মাছেদের মতো সব সময় সাঁতার কেটে চলে না, কাচের গায়ে ও পাতার ওপরে লেগে থাকে। ঠিক যেন আঠা দিয়ে আটকে রেখেছে। অবশ্য একেবারে যে সাঁতার কাটতে পারে না তা নয়। তবে অধিকাংশ সময় এক জায়গায় বসে থাকতে ভালোবাসে।
এরা লম্বায় সোয়া এক ইঞ্চি মতো হয়। পাওয়া যায় মলয় দেশ। সব খাবার খায়। এদের স্বভাব শান্ত প্রকৃতির।
★ হোয়াইট ক্লাউড মাউনটেন : লম্বায় দেড় ইঞ্চির মতো হয়। পাওয়া যায় চায়নাতে। এদের গায়ের রঙ খুব উজ্জ্বল। পিঠের ওপর দিকটা ফিকে সবুজ হয়। পিঠের ডানা ও ল্যাজ লাল হয়। এরা ছোট জাতের মাছ হলেও দেখতে খুব সুন্দর ও শান্ত স্বভাবের। এরা ঠাণ্ডা জলেও যেমন থাকতে পারে তেমনি 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডেও থাকতে পারে।
★ সিজারস টেল : এই মাছগুলি দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের মৌরলা মাছের মতো। তবে লম্বা বেশি হয় ও ল্যাজটা চেরা ঠিক কাঁচির দুটো ফলার মতো। এরা যখন জলের মধ্যে চলাফেরা করে তখন ল্যাজের ডগা দুটো বন্ধ করে ও খোলে। দেখায় ঠিক যেন কাঁচি দিয়ে কাটতে যাচ্ছে। এরা শান্তপ্রিয় মাছ।
★ নিগ্রো বার্ব : পুঁটিজাতের মাছ। সিংহল দেশে পাওয়া যায়। গায়ের রঙ একটু কালচে লাল, তিনটি কালো ডোরা দাগ আছে এবং ওপরের আঁশগুলি মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করে। এরা আড়াই ইঞ্চির মতো লম্বা হয়।
শান্ত স্বভাবের মাছ। পুরুষ মাছগুলি স্ত্রী মাছগুলির চেয়ে একটু বেশি লাল হয়। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 26-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ চেরি বার্ব : এরা পুঁটি মাছের জাত। এরা দেড় ইঞ্চির মতো লম্বা হয়। সিংহল দেশে পাওয়া যায়। তবে দেহের গড়ন জেব্রা মাছের মতো। রঙ লাল ও পেটের মাঝখানে একটি খয়েরি রঙের লম্বা দাগ আছে। শান্ত স্বভাবের মাছ ।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 26–28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
এবার কতকগুলি টেট্রা দলের মাছের পরিচয় দেওয়া হলো। এই মাছগুলি সবই পাওয়া যায় আমাজন নদীতে। এই মাছগুলি সবাই ডিম দেয় এবং অ্যাকোয়ারিয়ামে অন্যান্য মাছের সঙ্গে রাখা যায় ।
★ ব্ল্যাক বা উইডো টেট্রা : এই মাছগুলি অনেকটা চাঁদা মাছের মত দেখতে। পিছনটা গোল হয়। ছাই রঙের দেখতে। পিঠের দিকটা কালো মিশমিশে রঙের হয়। এরা গভীর জল পছন্দ করে। খুব চনমনে মাছ। যখন কালো রঙ ধরে তখন ভারী সুন্দর দেখায়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা 26–28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এরা পছন্দ করে। এর নিচে জলের তাপমাত্রা হলে এদের সাদা স্পট ধরার সম্ভাবনা খুব বেশি। অবশ্য এরা 28 ডিগ্রি পর্যন্ত তাপ সহ্য করতে পারে।
এরা আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত বড় হয়। পেটে ডিম না হওয়া পর্যন্ত পুরুষ ও স্ত্রী পৃথকভাবে চেনা মুস্কিল।
★ ফ্রেম টেট্রা : এদের দেহের গড়ন ব্ল্যাক টেট্রাদের মতো। রঙ লাল, ডানাগুলিও টকটকে লাল হয়। অবশ্য এই গাঢ় লালটা সব সময় ধরে না। দু‘ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় হয়। এরা খুব চনমনে হয় ।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 21-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ লিমন টেট্রা : এই মাছেদের রঙ পাকা পাতিলেবুর মতো। ওপরের অর্ধেকটা লাল হয় ও পিঠের ওপরের এবং পেটের তলার ডানায় কালো পাড়ের মতো দাগ আছে। দু‘ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 26-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ সারপে: দেহের গড়ন লম্বা কাঠ চাঁদার মতো। রঙ গোলাপী মোমবাতির মত। পিঠের ওপরের ডানা ও পেটের তলার ডানার তলাটা কালো হয়। কানকোর পাশে একটা কালো দাগ আছে। দেখতে ভারী সুন্দর। যখন অ্যাকোয়ারিয়ামে ঘুরে বেড়ায় তখন মনে হয় একটা লজেন্স যেন জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 26-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ হেড অ্যান্ড টেল লাইট : এই মাছেদের দেহের গড়ন পুঁটি মাছেদের মতো। গায়ের রঙ খুব ফিকে হলদে। চোখ ও ল্যাজের গোড়ায় 2টি আলো জ্বলে। দেখতে ভারী সুন্দর লাগে। দু‘ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 26-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ নিওন টেট্রা : এই মাছেরা একটু ছোট আকারের হয়। এদের গায়ের রঙ উজ্জ্বল। জোনাকি পোকার গায়ে যে রকম আলো জ্বলে এদের গায়েও সেরকম আলো জ্বলে। এদের গায়ের রঙ চোখ থেকে পিঠের ওপর দিকটা সবুজ ও পেটের তলার পিছনের দিকটা লাল হয়। ল্যাজ ও ডানাগুলির দিকে হলদে রঙের হয়। সবুজ রঙ বেশি উজ্জ্বল এবং আলো পড়লে মনে হয় যেন নিওন আলো জ্বলছে।
এই মাছগুলি দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-26 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
বড় মাছেদের সঙ্গে এদের না রাখাই ভালো।
★ রেড আই : এই মাছগুলি পুঁটি মাছেদের মতো দেখতে। চোখগুলি টকটকে লাল হয় ও জ্বলে। ল্যাজের গোড়ায় একটি কালো ডোরা দাগ আছে। গায়ের আঁশগুলি খুব উজ্জ্বল রূপার মতো। দেখতে ভারী সুন্দর।
এরা তিন ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
অ্যাকোয়ারিয়ামে জলের তাপমাত্রা হবে 22-28 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
★ কার্ডিনাল টেট্রা : এই মাছগুলি নিওন টেট্রার মতো দেখতে তবে আকারে বেশ বড় • হয় ও চওড়াও হয় নিওনের চেয়ে বেশি। শরীরের ওপরের দিকটা নিওন লাইটের মতো জ্বলে। নিচের দিকটা একটু ম্যাড়ম্যাড়ে লাল হয়। দেখতে অপূর্ব সুন্দর। এরা দু‘ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়।
পাওয়া যায় আমাজনের উপনদী অনোগ্রো নদীতে ।
কতগুলি লোচ জাতীয় মাছ আছে যারা অ্যাকোয়ারিয়ামের নিচে থাকে। এদের মেথর মাছ বলে। কারণ এরা তলার পরিত্যক্ত খাবার খেয়ে নেয়। অবশ্য খুব বেশি খাবার পড়ে থাকলে সব খেয়ে নিতে পারে না। এই লোচ জাতীয় মাছ নানা দেশের নানা রকমের দেখতে হয়।
দেশীয় প্রজাতির রঙিন মাছ
★ কালবাসু : দেহের পৃষ্ঠদেশ কালচে সবুজ ও অঙ্কীয়দেশ হালকা রঙের হয়। পাখনা কালচে রঙের হয়। পুচ্ছপাখনার ওপরের অংশ সাদা রঙের হয়। এরা 90 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ হাইফিন বার্ব : দেহের রঙ রূপালি ও আঁশের গোড়া কালো হয়। পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় পায়ু ও পৃষ্ঠ পাখনায় ছোপ থাকে। এরা ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ কাঞ্চন পুঁটি : দেহের পিছনের অংশ জলপাই সবুজ ও অঙ্কীয় ভাগ রূপালী রঙের হয়। দেহে লাল রঙের ছোপ থাকে। কডাল পেডাঙ্কল অঞ্চলে হলুদ রঙের ধারবিশিষ্ট কালো–সোনালি ছোপ থাকে। এরা 14 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গিলি পুঁটি : দেহের রঙ কালচে জলপাই সবুজ বা বাদামী হয়। অঙ্কীয়ভাগ সাদা রঙের
হয় ও কালো ছোপ থাকে। কডাল পেডাঙ্কল অঞ্চলে কালো ছোপ থাকে। পুচ্ছ পাখনা লালচে ও অন্য পাখনাগুলি হলুদ আভাযুক্ত কাচের মতো স্বচ্ছ হয়। এরা 4 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ফুটুনি পুঁটি : দেহের রঙ কালচে বাদামী বা ধূসর–হলুদ হয়। মাথা ও কানকোর রঙ উজ্জ্বল সবুজ। দেহের অঙ্কীয়ভাগ রূপালী রঙের হয়। কানকোর পিছনে, পায়ু পাখনার ওপরে ও কডাল পেডাঙ্কল অঞ্চলে একটি করে কালচে–নীল ছোপ থাকে। পাখনাগুলি কমলা আভাযুক্ত হয়। কেবলমাত্র বক্ষ পাখনা কাচের মতো স্বচ্ছ হয়। এরা 3.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ চেলা পুঁটি : দেহের রঙ রূপালী হয়। পিছনের দিক ধূসর রঙের হয়। কডাল পেডাঙ্কল অঞ্চলে ও পৃষ্ঠপাখনায় একটি করে গোলাকার ছোপ থাকে। পুরুষ মাছের পায়ু ও শ্রোণী পাখনা লাল রঙের হয়। এরা 13 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ টেরি পুঁটি : দেহের পৃষ্ঠদেশ ধাতব–সবুজ রঙের হয়। পায়ু পাখনার ওপরের দিকে একটি গোলাকার সোনালি ধারযুক্ত কালো ছোপ থাকে। পৃষ্ঠপাখনার অনেকগুলি কালো ছোপ থাকে। পাখনা কাচের মতো স্বচ্ছ হয়। এরা 9 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ পোথিয়া : দেহের পিছনের দিক ধূসর বা সবুজ রঙের হয়। অঙ্কীয়দেশ সাদা হয়। বক্ষ পাখনার ওপরের দিকে ও কডাল পেডাঙ্কলে একটি করে কালো ছোপ থাকে। পাখনাগুলি উজ্জ্বল সবুজাভ হয়। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ কাঁচি চেলা : দেহের রঙ স্বচ্ছ ও চকচকে রূপালি হয়। পৃষ্ঠপাখনার কাছে দৈর্ঘ্য বরাবর সবুজাভ দাগ থাকে। পাখনাগুলি হলদে রঙের হয়। এরা 6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ফুল চেলা : দেহের রঙ রূপালি হয়। দেহে রূপালি রঙের পার্শ্বীয় দাগ থাকে। এরা 12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ মৌরলা : দেহের রঙ সবুজাভ হলুদ হয়। দৈর্ঘ্য বরাবর রূপালি বর্ণের পার্শ্বীয় দাগ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ককস : দেহের রঙ রূপালি ও পিছনের দিক সবুজ হয়। 14-15টি উল্লম্ব নীল রঙের দাগ পৃষ্ঠপাখনা থেকে পিছনের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। দুই জোড়া শুঁড় বা বার্বেল থাকে। কানকোর রঙ সোনালি রঙের হয়। পাখনাগুলি গোলাপী রঙের হয়। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ খোস্কা : দেহের রঙ রূপালি ও পিছনের দিক সবুজ হয়। পার্শ্বরেখা বরাবর 8-12টি গাঢ় রঙের দাগ থাকে। দুই জোড়া শুঁড় বা বার্বেল থাকে। পাখনাগুলি হলুদ রঙের হয়। এরা 15.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ অঞ্জু : দেহের পিছনের অংশ রূপালি ধূসর, অঙ্কীয়দেহ হালকা হলুদ ও সাদা এবং পার্শ্বদেশ নীল রঙের হয়। মাথা থেকে পুচ্ছপাখনা পর্যন্ত 4টি সোনালি দাগ তির্যকভাবে বিস্তৃত থাকে। পায়ু পাখনায় সোনালি–নীল দাগ থাকে। পৃষ্ঠপাখনা নীল রঙের হয়। এরা 4.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ড্যানিও : দেহের পিছনের দিক জলপাই সবুজ ও পার্শ্বদেশ রূপালি রঙের হয়। অনেকগুলি নীল বর্ণের জালিকাকার দাগ থাকে। পায়ু পাখনায় 2-3টি দাগ থাকে। এরা 15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বাঁশপাতা মাছ : দেহের পিছনের দিক সবুজাভ ও অঙ্কীয়দেশ রূপালি রঙের হয়। সামনের দিকে অনেকগুলি নীল বর্ণের জালিকাকার দাগ থাকে। তিনটি নীলচে দাগ লেজ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় একজোড়া নীল দাগ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ফ্লাইং বার্ব : দেহের রঙ জলপাই সবুজ থেকে ধূসর হয়। অঙ্কীয়দেশ রূপালি–সাদা রঙের হয়। একটি গাঢ় পার্শ্বীয় দাগ মুখ থেকে পুচ্ছ পাখনার গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। পুচ্ছপাখনার গোড়ায় একজোড়া নীল দাগ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ঢেরা : দেহের পিছনের দিক জলপাই সবুজ রঙের হয়। পার্শ্বীয় ও অঙ্কীয় দেশ রূপালি রঙের হয়। একটি নীলচে–কালো পার্শ্বীয় দাগ চোখ থেকে পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। পায়ু পাখনার ওপরের দিকে একটি সোনালি দাগ থাকে। এরা 10 * সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ রাসবোরা : দেহের পৃষ্ঠদেশ জলপাই সবুজাভ বাদামি রঙের হয়। অঙ্কীয়দেশ রূপালি রঙের হয়। একটি নীলচে–কালো পার্শ্বীয় দাগ মাথা থেকে পুচ্ছ পাখনার গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। এরা 13 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ কালাবাট্টা : দেহের রঙ ধূসর বা হালকা বাদামী হয়। অঙ্কীয়দেশ হলুদাভ হয়। হালকা রঙের পার্শ্বীয় দাগ থাকে। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছপাখনা হলুদ–ধূসর ও অন্যান্য পাখনাগুলো কমলা রঙের হয়। এরা 12.4 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ঘরপইয়া : দেহের পিছনের দিক গাঢ় বাদামী ও অঙ্কীয়দেশ হাল্কা গোলাপী হয়। পৃষ্ঠপাখনার গোড়ায় এক সারি গাঢ় ছোপ থাকে। এদের সুগঠিত শুঁড় থাকে। এরা 14 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বোটিয়া লোচ : দেহের রঙ হলদে–কমলা হয়। চোখের নিচে কালো দাগ থাকে। পৃষ্ঠ পাখনায় 5-6টি কালো দাগ থাকে। পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় একটি কালো রঙের ছোপ ও 5-6টি আকৃতির কালো দাগ থাকে। এরা 7 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ স্পটেড লোচ : দেহের রঙ হলদে হয়। পার্শ্বরেখা বরাবর দেহের দু‘ পাশে 11টি গোলাকার বা ডিম্বাকার ছোপ থাকে। একটি রূপালি দাগও থাকে। এরা 4.2 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গ্রিন স্ট্রাইপড লোচ : দেহের রঙ পৃষ্ঠদেশে ধূসর ও অঙ্কীয়দেশ জলপাই সবুজ হয়। পৃষ্ঠদেশ থেকে বক্ষদেশের ওপর পর্যন্ত 9-12টি উল্লম্ব দাগ থাকে। পৃষ্ঠপাখনার সামনের পাখনারশ্মির গোড়ায় একটি কালো ছোপ থাকে। পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় একটি কালো রঙের ছোপ ও সারিবদ্ধ কালো বিন্দু সাজানো থাকে। এরা 5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গুঁতে : দেহ প্রসারিত ও দেহের রঙ বয়স অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। ছোট মাছের দেহের রঙ হলুদাভ হয়। মুখ থেকে পুচ্ছ পাখনা পর্যন্ত একটি হালকা দাগ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ কুলি লোচ : দেহ প্রসারিত ও দেহের রঙ লালচে বাদামী হয়। তিন জোড়া শুঁড় থাকে। চক্ষু ক্ষুদ্রাকার। পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনা ছোট হয়। এরা 6.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গঙ্গোতা লোচ : পৃষ্ঠদেশে 7-8টি উল্লম্ব দাগ থাকে। অঙ্কীয় দেশে ধূসর–সাদা রঙের হয়। পার্শ্বদেশে গাঢ় রঙের ছোপ থাকে। নিম্ন চোয়ালে, পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনায় গাঢ় ছোপ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বোটিয়া : দেহের রঙ ধূসর হয়। দেহের পিছনদিক থেকে উদর পর্যন্ত 7-8টি বাদামী দাগ থাকে। পুচ্ছপাখনায় আয়তাকার কালো ছোপ থাকে। এরা 9 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ পোতাসি : দেহের রঙ রূপালি সবুজ হয়। দেহের পার্শ্বদেশে 4টি লম্বা দাগ থাকে। পুচ্ছ পাখনার গোড়ায় একটি হাল্কা ছোপ থাকে ।
★ বাতাসি : দেহের রঙ হলুদাভ হয়। শুঁড় ছোট হয়। পার্শ্বরেখার কাছে একটি গাঢ় লম্বা দাগ থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ট্যাংরা : দেহের রঙ উজ্জ্বল সবুজ বা হলুদ হয়। অঙ্কীয়দেশ সাদা হয়। পার্শ্বদেশে 4-5টি বাদামী দাগ থাকে। পাখনাগুলি স্বচ্ছ হয় ও বক্ষ পাখনায় একটি গাঢ় ছোপ থাকে। এরা 18 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ টোরেন্ট ক্যাটফিশ : দেহ প্রসারিত, মস্তক ক্ষুদ্র ও অবনমিত। ত্বক পুরু, পৃষ্ঠ কাঁটা নরম। এরা 12.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বাগহারী : দেহ সবুজ অথবা গাঢ় বাদামী রঙের হয়। একটি পৃষ্ঠপাখনা থেকে শ্রেণী পাখনা পর্যন্ত, একটি অ্যাডিপোস পাখনার গোড়া থেকে পায়ু পাখনা পর্যন্ত ও একটি কডাল পেডাঙ্কল অঞ্চলে মোট তিনটি গাঢ় দাগ থাকে। পুচ্ছ পাখনা হালকা হলদে–ধূসর রঙের হয়। এরা 19 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গাঙ্গেয় এরিথিসটিম : দেহের আকৃতি কদাকার হয়। দেহের পৃষ্ঠদেশ হলুদ–বাদামী ও অঙ্কীয়দেশ হালকা রঙের হয়।
★ জুঙ্গলা : দেহের রঙ ধূসর হয়। পুচ্ছ পাখনা সাদাটে ও প্রতিটি খণ্ডে একটি করে কালো ছোপ থাকে। পার্শ্বদেশে 4টি করে কালো দাগ থাকে। এরা 15 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা
হয়।
★ হরহরা : দেহের রঙ হলুদ–বাদামী হয়। পৃষ্ঠ পাখনার পিছনের অংশে, 4টি বড় দাগ থাকে। অ্যাডিপোস পাখনার শেষে একটি গাঢ় ছোপ থাকে। এরা 2.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ হুড্ডা নাংগ্ৰা : দেহ প্রসারিত হয়। দেহের রঙ চকচকে তামাটে ও পার্শ্বদেশ সোনালী হয়। পৃষ্ঠপাখনায় একটি কালো দাগ থাকে। পুচ্ছ পাখনার খাঁজ গভীর হয়। এরা 8.5 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ চাগা : দেহের গড়ন ব্যাঙাচির মতো। মুখ চওড়া হয়। দেহের রঙ কালচে বাদামী হয়। পাখনাগুলি কালো ছোপযুক্ত গাঢ় বাদামী রঙের হয়। এরা 20 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা
হয়।
★ কাঁকলে : দেহের পৃষ্ঠদেশ সবুজ, পার্শ্বদেশ রূপালি ও অঙ্কীয়দেশ বিবর্ণ সাদা হয়। পার্শ্বদেশে একটি রূপালি দাগ ও 4-5টি ছোপ থাকে। পৃষ্ঠ ও পায়ু পাখনার কিনারা গাঢ় রঙের হয়। এরা 40 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ ধেনোচুনে : দেহের পৃষ্ঠদেশ সবুজ ও অঙ্কীয়দেশ সাদা বা নীলচে হয়। অক্সিপিটাল ছোপ থাকে। পাখনাগুলি হলুদ রঙের হয়। এরা 9 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ চাঁদামাছ : দেহ স্বচ্ছ, রূপালি হলুদ ও পার্শ্বদেশে রূপালি লম্বা দাগ থাকে। চক্ষু কালো ও পাখনাগুলি কমলা রঙের হয়। পৃষ্ঠ পাখনার ওপরের অংশ গাঢ় কালো রঙের হয়। এরা 11 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গোবি : দেহের রঙ বিবর্ণ নীল অথবা নীলচে ধূসর হয়। পার্শ্বদেশ অনেকগুলি কালো ছোপযুক্ত জলপাই সবুজ হয়। দ্বিতীয় পৃষ্ঠপাখনা, পায়ু পাখনা ও পুচ্ছ পাখনায় কিছু কালো ছোপ তাকে। পুচ্ছ পাখনায় কাঁটা থাকে। এরা 6 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বাটকই : দেহে রঙ–বেরঙের ছোপ থাকে। কানকোর পিছনের দিকে একটি নীল–কালো ছোপ থাকে। পাখনাগুলি হলদে–সবুজ, নীলচে অথবা গাঢ় কালো রঙের হয়। গাঢ় নীল দাগের একটি সারি দেহের মধ্যভাগে থাকে। এরা ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ বুটিস গোবিড : দেহের রঙ কালচে। পার্শ্বদেশে অনেকগুলি গাঢ় দাগ থাকে। বক্ষ পাখনায় 1-2টি কালো ছোপ থাকে। এরা ৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ নোবেল গোরামি : দেহের রঙ বাদামী হয়। পার্শ্বদেশে দুটি লম্বা দাগ থাকে। পাখনাগুলোয় কাঁটা থাকে। এরা 10 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ খলসে : দেহ ডিম্বাকৃতি হয়। পুরুষ মাছের দেহে নীলাভ লাল পরিবর্তভাবে বিন্যস্ত ডোরাকাটা দাগ থাকে। স্ত্রী মাছের গা হালকা বর্ণের হয়। পুরুষ মাছের পৃষ্ঠপাখনা তীক্ষ্ণ হয় ও স্ত্রী মাছের পৃষ্ঠ পাখনা গোলাকার হয়। এরা 12 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
★ গলচি : দেহের পৃষ্ঠদেশ বাদামী অথবা সবুজ ও অঙ্কীয়দেশ হালকা হলুদ রঙের হয়। দেহের পার্শ্বরেখা বরাবর ওপরে ও নিচে দুটি লম্বা দাগ থাকে। পৃষ্ঠপাখনা হালকা কমলা রঙের হয়। এরা 38 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়